বিসিবির নির্বাচন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিস্থিতি এখন স্পষ্ট হয়ে এসেছে। যাচাই-বাছাই ও শুনানির পর মোট ৫০ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী আগেই নির্বাচন থেকে ওতপ্রোতভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন। বুধবার শেষ মুহূর্তে ১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে, নির্বাচনে অংশ নেবেন মোট ৩৩ প্রার্থী, যারা তিনটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৫টি পরিচালক পদে লড়াই করবেন ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে।
নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. শেখ জোবায়েদ হোসেন বলেন, “প্রার্থী তালিকা এখন চূড়ান্ত করে দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারকারীরা ব্যক্তিগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ তিনি আরও জানান, বিশেষ করে ঢাকা ক্লাবগুলোকে নিয়ে গঠিত ক্যাটাগরি-২-তে বেশির ভাগ প্রার্থীই এখন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এই ক্যাটাগরির ৩০ প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জনই নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন, যার ফলে কিছু ক্লাবের জন্য এই ক্যাটাগরিতে নির্বাচন আর হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না। এমন পরিস্থিতিতে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির ইফতেখার রহমানসহ ১৫ জন প্রার্থী এই ক্যাটাগরিতে অংশ নিতে পারবেন না। এই ক্যাটাগরির প্রার্থী সংখ্যা এখন মোট ১৬ জন, যারা ১২টি পরিচালক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কেবল ১৬ জনের মধ্যে থেকে ভোটে জয়লাভ করবেন ১২ জন।
আরো জানা গেছে, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা নিয়ে গঠিত ক্যাটাগরি-১ থেকে নির্বাচিত হবেন ১০ জন পরিচালক। এখানে যদিও ৭১ জন কাউন্সিলর ভোটার হওয়ার কথা ছিল, তবে নরসিংদী জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুপস্থিতির কারণে ভোটার সংখ্যা এখন ৭০ জন। এই ভোটাররা শুধুমাত্র নিজেদের বিভাগের জন্য ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছেন। তবে অনেক অভিযোগ উঠেছে कि এই ক্যাটাগরির বেশির ভাগ কাউন্সিলরই এই নির্বাচনে একশ্রেণির প্রার্থী তথা যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পছন্দের প্রার্থীদের মনোনীত করেছেন, যারা বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলামকেও সমর্থন দিচ্ছেন।
বিশেষ করে, এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় খবর হলো সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের প্রার্থিতা প্রত্যাহার। শুধু তামিমই নয়, তার প্যানেল থেকে আরও কিছু জনপ্রিয় প্রার্থীও এখন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন না। এতে নির্বাচনী উত্তাপ কিছুটা কমে এসেছে।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, তিনটি বিভাগের মধ্যে ভোটের লড়াই চলবে। অন্য বিভাগ ও ক্যাটাগরিতে একক প্রার্থী থাকায় সেগুলিতে সরাসরি নির্বাচিত করা হবে। আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় ক্রিকেটার ও সাবেক নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক, জুলফিকার আলী খান, শাখাওয়াত হোসেন এবং রাহাত সামস।
এদিকে, বিভিন্ন বিভাগে নির্বাচনী লড়াইও দেখা যাচ্ছে। ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জন্য আলাদা ভোট হবে। ঢাকার জন্য নির্বাচনে লড়বেন বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম, নাজমুল আবেদীন ও এস এম আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান। অন্যদিকে, রাজশাহী ও রংপুরের প্রার্থীরা নিজেদের বিভাগীয় কাউন্সিলরদের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সাবেক ক্রিকেটার ও বিভিন্ন সংস্থা প্রতিনিধির জন্য ক্যাটাগরি-৩-এ রক্তরঙের ভোটের পরিবেশ। মোট ৪৫ জন ভোটার এই ক্যাটাগরিতে ভোট দেবে, যার মধ্যে মনোনয়নপ্রাপ্ত হলেন দেবব্রত পাল ও খালেদ মাসুদ। প্রার্থিতাদের মধ্যে কেউ কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে ফেলেছেন।
সব মিলিয়ে, এই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন মোট ১০ জন পরিচালক, যাদের মধ্যে খুলনা বিভাগ থেকে আবদুর রাজ্জাক, জুলফিকার আলী খান, বরিশাল ও সিলেটের প্রার্থীরাও রয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে এখনো লড়াই চলছে। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান বোর্ডের সভাপতি, নতুন প্রার্থীরা এবং ইতিহাসের নাটকীয় পরিবেশে গড়ে উঠছে নতুন বিসিবি।