আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় বাংলাদেশ শক্তিশালী দেলোয়ার প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়। এই ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল খুবই প্রতি়তাবধানে, কিন্তু রশিদ খানের এক স্পেলে হঠাৎ হেরের শঙ্কা দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের নবীন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান এবং তরুণ রিশাদ হোসেনের কৌশলী ব্যাটিং ও মানসিক দৃঢ়তার ওপর ভর করে সে চাপ কাটিয়ে জয় হাসিল করে বাংলাদেশ। নাটকীয় এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত তারা ৬ উইকেটে আফগানিস্তানকে হারায়।
প্রথম ম্যাচের শুরুতেই তানজিদ তামিম ও পারভেজ ইমনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের স্কোর দ্রুতই এগিয়ে যায়। শুরুতেই তারা আফগান বোলারদের খুবই ভালোভাবে মোকাবেলা করে অর্ধশতক করেন। দুটি ওপেনার দ্রুতই দলের জন্য বড় সংগ্রহের ভিত্তি স্থাপন করেন। এরপর ম্যাচের শেষ পর্যায়ে প্রয়োজন ছিল ৫১ বলে ৪৩ রান, হাতে ছিল সব উইকেট। এই পরিস্থিতিতে সবাই সহজ জয়ে আশা করছিল। তবে বাংলাদেশ দলের জন্য কিছুটা নাটকীয়তা ঢুকে পড়ে, যখন টপ অর্ডার থেকে ৬ ব্যাটার বিদায় নেন মাত্র ৯ রানের ব্যবধানে, যা দলকে চরম বিপদে ফেলতে পারতো।
বিশেষ করে, রশিদ খানের বল যেন বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়ায়। এই স্পিনারের ৪ উইকেট শিকার পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ফলে তারা ১০৯ থেকে ১১৮ রান পর্যন্ত হারিয়ে যায়। এরপর, দলটি মানসিকভাবে লড়ে উঠে হাল ধরেন বড়ো আকারের ব্যাটিংয়ে, যেখানে নতুন অধিনায়ক সোহান ও রিশাদ ধৈর্য্য ও সচেতনতার সঙ্গে ব্যাট করে নিজেরা রক্ষা পায়।
শারজায় আফগানদের দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের শুরুটা ছিল ভিন্ন রকমের। প্রথমদিকে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং পারভেজ হোসেন ইমন ম্যাচের প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর ধারালো আঘাত হানেন। তারা অর্ধশতক করে থামে, তামিম ৫১ এবং ইমন ৫৪ রান করে ফিরতে বাধ্য হন। এরপর অন্য ব্যাটাররা চারপাশে চাপ সৃষ্টি করলেও অপ্রতিরোধ্য থাকেননি। মধ্যবর্তী সময়ে কিছু ব্যর্থতা থাকলেও, সোহান ও রিশাদ ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি সামলে ম্যাচ শেষ করেন। সোহান ১৩ বলে ২৩, আর রিশাদ ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
অন্যদিকে, ম্যাচের আগের দিনই শারজাহতে টস জিতে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে। দলের জন্য সর্বোচ্চ সংগ্রহ করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ৪০ রান। বাংলাদেশকে প্রথম সারিতে বড় ধাক্কা দেন নাসুম আহমেদ, যিনি ইব্রাহিম জাদরানকে LBW করে দেন। জাদরান ১৫ রান করে আউট হন। এছাড়া, সাদিকুল্লাহ আতালও ১০ রান করেন।
এরপর দউরিউস রাসুলি ও মোহাম্মদ ইশাক দ্রুতই ফিরে যান বলের আঘাতে। তারা দুইজনই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। আফগানিস্তান দ্রুতই বিপদে পড়ে যায়, মাত্র ৪০ রান করে ৪ উইকেট হারিয়ে। এরপর দলের ব্যাটিংয়ে বড়ো পারফর্ম করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। গুরবাজ ১৮ বলে ১৮ রান করে আউট হন, যা দলকে বড় সংগ্রহের পথে বাধা দেয়।
অবশেষে, শেষদিকের ঝড়ো ব্যাটিং দেখান মোহাম্মদ নবি। তিনি ১৮তম ওভারে তাসকিনের ওপর তিন ছক্কা হাঁকান। যদিও এই ওভারে তিনি আউট হন, তবে ২৫ বলে ৩৮ রান করে যান। তার পাশাপাশি, শরাফুদ্দিন আশরাফ ১২ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। এই ব্যাটাররা শেষ মুহূর্তে আফগানিস্তানের রান সংগ্রহকে কিছুটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে আসেন।