জুলাই মাসে স্বাক্ষর করে শুধু দায়িত্ব শেষ হয় না, বরং এর বাস্তবায়নই হবে মূল পরীক্ষার বিষয়—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। আজ রোববার (৫ অক্টোবর), ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের চতুর্থ দফা সংলাপের আগে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ছয়টি বাস্তবায়ন প্রস্তাব জমা পড়ে, যার ওপর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়, তবে কমিশন সেই একীভূত সুপারিশগুলো সরকারের কাছে উপস্থাপন করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, শেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব সরকারেরই। যদি সব পক্ষ ঐক্যবদ্ধ হন, তবে এই প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা সম্ভব। এছাড়াও, তিনি জানান, রোববার সকালের এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যেখানে তিনি জোর দেন যে, জুলাই সনদকে সকল রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষরিত একটি দৃষ্টান্তমূলক দলিলে রূপ দেওয়া দরকার।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, আমরা चाहি বা ১৫ অক্টোবরের কাছাকাছি সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জুলাই সনদের স্বাক্ষর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। নির্বাচন আসন্ন, তাই এর আগেই এই কাজটি সম্পন্ন করার চেষ্টায় রয়েছি।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. আইয়ুব মিয়া সহ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলী রীয়াজ বলেন, দেশের মানুষের রক্তে যে দায়িত্ব এসেছে, তা শুধুমাত্র কাগজে স্বাক্ষর করে শেষ হবে না। এই দায়িত্ব পূরণ করতে হবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে। দেশের কাঠামোগত সংস্কারই এখন সময়ের দাবী।
তিনি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, দলের বাইরে গিয়ে, নাগরিকের অধিকার রক্ষার জন্য একসাথে কাজ করতে পারলে এই সংস্কার প্রক্রিয়া সহজ হবে, এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়—এটাই এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই নেতা ব্যাখ্যা করেন, এই সনদের বাস্তবায়ন কেবল প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি নাগরিক দায়বদ্ধতা। তাই যারা স্বাক্ষর করছেন, তাদের উচিত এই দায়িত্বের প্রতি আন্তরিক থাকা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও একই মনোভাব দেখানো।