ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে এস আলম গ্রুপের অবৈধভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বহিষ্কারের জন্য নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছে সচেতন ব্যাংকার সমাজ। রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। একই সময়ে, ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামও একই দাবিতে জনসাধারণের সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া ব্যাংকাররা জানান, পটিয়া ও এস আলম গ্রুপের দখলদার চক্রের কারণে ব্যাংকের পরিবেশ অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। দেশের অন্যতম বড় বেসরকারি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তাদের কারণে ব্যাংকের স্থিতিশীলতা লুণ্ঠিত হচ্ছে এবং এতে ব্যাংকের সম্পদ ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে গ্রাহকদের হয়রানির শঙ্কা জোরদার হচ্ছে।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক পেজ দুবার হ্যাক হয়েছে, যা দখলদার চক্রের ছত্রছায়ায় ঘটেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আর কোনো অরাজকতা সহ্য করা হবে না এবং পটিয়া সন্ত্রাসী বা এস আলমের অদক্ষ কর্মকর্তাদের দ্রুত বহিষ্কার করতে হবে।
বিক্ষোভে ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের নেতাকর্মী ও সাধারণ গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন।
অতিসতর্ক করে বক্তারা বলেন, আর দেরি নয়। দখলদার এবং অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের মাধ্যমে ব্যাংক যেন আর কোনো অঘটন না ঘটে, সে জন্য দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া, এস আলম গ্রুপসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক খাতে বড় অঙ্কের অর্থলোপাত, পাচার ও সম্পদ বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
তাদের মতে, এই অর্থপাচার ও ঋণলোপাটের কারণে ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন হয়েছে, এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। ভুয়া ঋণ দেয়া, স্বচ্ছতা হীন লোনের কারণে বৃহৎ ক্ষতির পরিমাণও বেড়েছে।
গ্রাহক ফোরাম জানিয়েছে, যারা অর্থপাচার ও ঋণচুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের সম্পদ দ্রুত উদ্ধার ও বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া, অডিট ব্যবস্থা ও কোরগভর্নেন্সের সার্বিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, তদন্ত সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে এবং ফলাফল জনসাধারণকে জানাতে হবে।
আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাচ্ছি, এই অনিয়ম ও অভিযোগের দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত করে দোশিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ব্যাংকের বিশ্বস্ততা এবং দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।