অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে কত পরিমাণ অর্থ ফিরে আসবে, তা এখনো স্পষ্ট বলে কিছু জানানো হয়নি। তিনি বলেন, যারা এই অর্থ পাচার করে থাকেন, তারা এ বিষয়ে খুবই সচেতন এবং কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। অর্থ ফেরত আনার জন্য কিছুসময় প্রয়োজন, তবে ইতিমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন লিগ্যাল ফার্মের সঙ্গে আলোচনা চলছে, আশা করা যায় ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই কিছু টাকা ফিরে আসতে পারে, আর বাকির জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সালেহউদ্দিন জানান, এই কৌশল বা প্রক্রিয়া কোনো সরকার এড়াতে পারবে না। তিনি বললেন, যদি আপনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে দাও সেন্ট্রাল ব্যাংকে বা সুইস ব্যাংকে,’ তাহলে অবশ্যই দেবে না। এজন্য রাষ্ট্রের আইনগত প্রক্রিয়াগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, চলতি বছরে ১১-১২টির মতো অর্থাভার গোপনে রাখা হয়েছে এবং এর মধ্যে বেশিরভাগ জাগায় বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ রয়েছে, সেগুলোর ওপর নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে।
নতুন সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন বলেন, সরকারের জন্য এই প্রসেসগুলো চালিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক। যদি এগুলো অব্যাহত থাকে, তবে অর্থ ফেরত আসবে। অন্যথায়, এটা সম্ভব নয়। অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে তিনি জানাতে চাননি এবং বলেন, এ বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেই প্রশ্ন করতে হবে।
অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্য, কিছু অর্থ এখনও পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবে। বর্তমানে যেসব দেশের অ্যাকাউন্টে এই অর্থ থাকতে পারে, তার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্পষ্ট করেছেন, এই বিষয়গুলো নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত চলছে।
অর্থ দপ্তরে বরাদ্দের ব্যাপারে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি সত্য নয়, কারণ প্রকল্পগুলো আগেই শুরু হয়েছে। আবার, দেশের অসংখ্য পরিবারের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং পুষ্টিহীনতার বিষয়েও তিনি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের খাদ্যতালিকায় এখনো বেশ কিছু ঘাটতি আছে, বিশেষ করে শিশু ও মা-জনিত পুষ্টির সমস্যায়। আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে, ভিজিএফ ও স্পেশাল ট্র্যাকের মাধ্যমে ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য। জেলেদের জন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও তারা ২০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের খাদ্য ব্যবস্থা সাধারণত চালের ওপর বেশি নির্ভরশীল, অন্য বিষয়গুলো প্রয়োজন হলেও আমাদের ক্রয়ক্ষমতা কম; তাই আমিষের দরকার, প্রধানত ডিমের মতো জিনিসের। অনেক মানুষ এখনো এসব ক্রয় করতে পারছেন না।