প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে ইতিমধ্যেই সিরিজের জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ছিল ‘ডেড রাবার’ ম্যাচ, যেখানে নাটকীয়তা ও উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আফগানিস্তানকে শূন্য করে হোয়াইটওয়াশ করতে সক্ষম হলো বাংলাদেশ। এর পেছনে মূল কৃতিত্ব তাদের দুর্দান্ত বলিং আক্রমণ, যার মধ্যে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিবের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এই তিন ক্রিকেটারের অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে আফগান ব্যাটসম্যানরা খুব বেশি রান সংগ্রহের সুযোগ পাননি, যেনো দেড়শর বেশি রানের লক্ষ্যও বেশ কঠিন হয়ে যায় তাদের জন্য। মাঝের কিছু সময়ে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে গেলেও, সাইফউদ্দিনের অবদান তাদের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করেন বাংলাদেশি ওপেনাররা। সফরকারীদের পক্ষে দারুণ শুরু করেন পারভেজ হোসেন ইমন, তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাই তাঁকে আউট করে দেন। এরপর তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসান ক্রমাগত আক্রমণে থাকেন। আফগান বোলারদের বিরুদ্ধে তারা নিয়মিত চার ও ছক্কার মারেনে রান তুলতে থাকেন। এর মধ্যে, তানজিদ হোসেন পঞ্চাশ ছুঁইয়ে জীবন পান। বিপদে পড়লেও দ্রুত ফেরত আসেন, তবে তার পরে ফের চমক দেখায় সাইফ হাসান; তিনি একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়ে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই জয়ে বাংলাদেশ হাসিল করে ইতিহাস, তারা প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে। বাংলাদেশি অধিনায়ক জাকির আলী অনিকের নেতৃত্বে দলে ছিলো উজ্জ্বল মনোভাব। শুরুতেই বাংলাদেশের স্পিনার মুজিব উর রহমানের মারকুটে ওভার দিয়ে ম্যাচের অপার সুযোগ তৈরি হয়। প্রথম ওভারে আফগানরা কিছুই করতে পারেনি, যা পুরো ম্যাচের ধারা পরিবর্তন করে দেয়। অনুরূপ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওপেনাররা চালিয়ে যান। তবে মাঝপথে, যখন কিছু উইকেট পড়ে, বাংলাদেশ বেশ বিপদে পড়ে। কিন্তু সাইফের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কখনো দলকে ভালই দিন আনে। তার ৭ ছক্কায় ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস দেখিয়েছে দলের জয়ের জোরদার সম্ভাবনা। তানজিদও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন, যদিও তাকে জীবন পান। তিনি ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে ফেরার আগে ৩৩ রান করেন। এরপর সাবলীলভাবে ব্যাটিং চালিয়ে যান সাইফ হাসান, এবং তাঁর ছক্কায় স্টেডিয়ামের বাইরে বল পাঠিয়ে দেন। তবে, এক ওভারেই ঘটে অপ্রত্যাশিত বিপদ; জাকের পাটোয়ারির বলে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেট হন। তারপরের কিছু সময় বাংলাদেশিরা বেশ সংকটের মুখে পড়লেও, মাঠে দলের স্পিরিট ও মনোভাব বদলায়নি। সাইফের সর্বশেষ ইনিংসে, তিনি ৯২ মিটার দূরে ছক্কা হাঁকিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন। তার সঙ্গে এশিয়া কাপের পর এই তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। শেষ পর্যন্ত, ৩৮ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন সাইফ হাসান। তার সতীর্থ নুরুল হাসান সোহান ১০ রানে থাকেন। আফগানিস্তানের পক্ষে দুটি উইকেট নেন মুজিব উর রহমান। এই জয়ের ফলে বাংলাদেশের অঙ্গনে নতুন ইতিহাস লেখা হলো, যেখানে তারা প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৩-০ ফাইনাল পরিসংখ্যান পেরিয়ে হোয়াইটওয়াশের জয়লাভ করে।