বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে নাটকীয়তা আরও বাড়েনি, বরং নির্বাচন ঘিরে অস্বস্তি ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। গত শনিবার সংগঠকরা এক সংবাদ সম্মেলনে তফসিল পরিবর্তন, নির্বাচন পেছানোর দাবি ও তিন দফা দাবিতে পুনরায় আন্দোলনের সূচনা করেন। তারা এখন বৃহত্তর আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষ থেকে সংগঠকদের পক্ষে এই স্মারকলিপি পাঠানো হয়, যেখানে তারা চলমান সংকটের সমাধানে তিনটি মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। প্রথমত, বিসিবির বর্তমান নির্বাহী পর্ষদ সময় বাড়িয়ে পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন, কাউন্সিলরশিপ সংক্রান্ত বিতর্ক এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিদ্যমান নির্বাচন প্রক্রিয়া পুনঃনির্ধারণ। দ্বিতীয়ত, বিকল্প হিসেবে অ্যাডহক কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ এবং শেষ পর্যন্ত নতুন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব।
সংগঠকেরা অভিযোগ করেন, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করে বিষয়টি জটিল করে তুলছে। তারা জানান, প্রথমে ১৫টি ক্লাবের অনুমতি প্রদান করলেও, বর্তমান সভানেতা আমিনুল ইসলাম বুলবুলের স্বার্থান্বেষী মহলশাসিত পরিবেশের কারণে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এর ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। গত কয়েক দফা বৈঠক হলেও কোনও সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে সংগঠকরা তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের বড় ক্লাবগুলোকে প্রভাবিত করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নির্বাহী পরিষদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় রয়েছে কিছু কর্মকর্তা, যা গঠনতন্ত্রের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের প্রিমিয়ার ও বিভাগের ক্লাবগুলো দেশের ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, তারা দেশের উন্নয়নে ব্যয় করে থাকে কোটি কোটি টাকা। তবে, এই মূল্যবান অবদান রয়েছে সংকটে। সংগঠকদের দাবি, বিভাগের ও জেলা পর্যায়ের কাউন্সিলর তালিকা সরকারের হস্তক্ষেপে ভয়ঙ্করভাবে আক্রান্ত হয়েছে। শীর্ষ ক্লাবগুলো যেমন মোহামেডান ও আবাহনী এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান। পাশাপাশি, বর্তমান সভাপতির সময়ে ১৫টি তৃতীয় বিভাগীয় ক্লাবের টুর্নামেন্ট আয়োজনের শেষ বা ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্লাব সংগঠকদের অনেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার চিন্তাভাবনা করছেন।
আরও অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থায় ১২ পরিচালক পূর্বেই নির্বাচিত হয়েছে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার সৃষ্টি করছে। সব মিলিয়ে, দেশের ক্রিকেট উন্নয়ন ও স্বচ্ছতার স্বার্থে এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য সকল পক্ষের সমঝোতা ও উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে।