ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকে শুরু করে সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তিনি সরাসরি রাজপথে নেমেছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্রীকরণ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন। তার এই সরব উপস্থিতি এখনো অব্যাহত রয়েছে, যেখানে তিনি সময়ের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন। এবার তিনি নিজের একজন ব্যক্তিগত উপলব্ধি শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি জানালেন তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
আজ রোববার তিনি নিজের ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি এমন এক মেয়েকে হতে চেয়েছিলাম, যে সবাইকে খুশি রাখতে পারে— যে অবাধ্য নয়, বাধ্যতামূলক, শান্তভাবে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারে। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমি সেই মানুষটা হতে পারিনি, যেভাবে সবাই দেখতে চেয়েছিল। আমি সত্যিই চেষ্টা করেছি, সামর্থ্য দিয়ে চেষ্টা করেছি। পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশিত ‘নারী’ হওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি ব্যর্থ হলাম। এই ব্যর্থতার জন্য আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি অন্য কারও স্ক্রিপ্টে বাঁচার জন্য জন্মই নেই। আমার কথা অনেকের কাছে অস্বস্তিকর, আমি যা বলি বা করি তা অনেকের সান্ত্বনার সীমা ভেঙে দেয়। আমি সহজ মানুষ নই, তবে কঠোর নয়। আমি কাউকে আঘাত দিই না, অসম্মানও করি না— যদিও অনেকেই আমার প্রতি অশোভন আচরণ করে।
বাঁধনের কথায়, চলতি মাসের শেষে তার জন্মদিন। তিনি ভাবছেন, এখন তিনি নিজেকে সুখি করে জীবন কাটাবেন— স্বচ্ছন্দে, সৎভাবে, কোনও ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন ছাড়া। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আমার সঙ্গে অসন্তুষ্ট হন, কষ্ট পান বা আমাকে ভয় পান, ব্লক করে দেন বা ঘৃণ্য ভাবেন, তার জন্য আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, যারা আমাকে যত না পছন্দ করে, তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বুঝতে পারে, এবং আমার সত্যে শক্তি পায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমি নিজের প্রতি ভালোবাসি।’
সবশেষে, তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি ভাঙা নই। আমি শুধু এক পৃথিবীর কাছে অস্বস্তিকর, যেখানে আজও নারী হিসেবে আসল ভূমিকায় থাকতে ভয় পায়। আমি তোমায় ভালোবাসি, আজমেরী হক বাঁধন। তুমি যে নারী হতে চেয়ো, শেষ পর্যন্ত তুমি সেই নারীই হয়ে উঠেছেন।’