বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নতুন একটি ডামা সামনে এসেছে। বিশেষ করে, মামলার অন্যতম আসামি সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা (৫১) এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা আদালত।
এর আগে, মঙ্গলবার পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছেন। এর মধ্যে প্রধান আসামি হিসেবে ধুনট উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল (৪৮) এবং ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা ছিলেন।
বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর রাষ্ট্রপক্ষের মহান্যাঞ্জ মোঃ মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ‘‘অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে তদন্তকারী অফিসার বগুড়া পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই প্রক্রিয়ার পর, আদালত বুধবার গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশ দেন। তবে, মুরাদুজ্জামান হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।’’
মামলার অভিযোগে জানা যায়, ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল, একটি স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। শিশুটির ভিডিও ধারণ করে রাখে অভিযুক্ত মুরাদুজ্জামান। পরবর্তীতে, ভুক্তভোগীর মা ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তে পুলিশ ওই সময় জব্দকৃত মোবাইলফোনে শিশুটির ধর্ষণের দৃশ্যের ভিডিও দেখতে পান।
কিন্তু, তদন্তের অনুরূপ সময়, ওসি কৃপা সিন্ধু বালা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে জব্দকৃত মোবাইল থেকে ধর্ষণের ভিডিও ও অন্যান্য আলামত নষ্ট করে দেন বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি অতিব গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, মামলার বাদী লিখিত অভিযোগ করেন পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। উল্লেখ্য, এর ফলে, ওসিকে ধুনট থান থেকে সরিয়ে পিবিআইয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরে, পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ আলী, ২৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন, যেখানে কৃপা সিন্ধু বালাকে এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তদন্তের এই প্রক্রিয়ায়, মঙ্গলবার মন্তব্যের জন্য বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।’’ এই অভিযোগের ভিত্তিতে, আদালত কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। অদ্যাবধি, অভিযুক্তের খোঁজখবর নেওয়া চলমান।