বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের সঙ্গে থাকবে রাষ্ট্রের সহায়তা, বাধা নয়। শনিবার (১১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে আমরা আনন্দে উদযাপন করছি সব কন্যাশিশুর স্বপ্ন দেখার, শিখার, নেতৃত্ব দেওয়ার এবং মর্যাদার সঙ্গে জীবন যাপনের অধিকার।
তারেক রহমান ব্যাখ্যা করেন, একজন বাবার দৃষ্টিকোণে মেয়েদের ক্ষমতায়ন কেবল একটি নীতির বিষয় নয়, এটি ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। তিনি স্বপ্ন দেখেন এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিটি মেয়ের জন্য একই স্বাধীনতা, সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে—এমন প্রত্যাশা যা একজন বাবা-মা তার সন্তানদের জন্য চায়।
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি সরকার সব সময় মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ঐতিহ্যবাহী কাজ করে এসেছে, এবং ভবিষ্যতেও সেই উন্নয়ন ধারাবাহিক রাখার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় আমরা দেখেছি, তিনি কেমনভাবে তৈরি পোশাক শিল্পকে শুধু একটি শিল্প হিসেবে নয়, বরং আশার প্রতীক করে তুলেছিলেন। এতে লক্ষ লক্ষ নারী আনুষ্ঠানিক কাজে যোগদান করে অার্জন, সম্মান ও স্বাধীনতা লাভের সুযোগ পান। সেই সময়ের নেতৃত্বে নারী কল্যাণ ও উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়, যেখানে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকারের অধীনে মেয়েদের শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা কেবল সুবিধা নয়, বরং সকলের জন্য আবশ্যক। নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার ঘোষণা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মেয়েকে বিদ্যালয়ে রাখতে সহায়তা করে, যার ফলশ্রুতিতে পরিবেশের পরিবর্তন, শক্তিশালী সমাজ তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়নের নতুন দিগন্ত উম্মোচন হয়।{
তারিসহ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েদের স্কুলে অংশগ্রহণের পরিমাণ সমান হয় ছেলে মেয়েদের, যা বাল্যবিবাহ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং বিশ্বের স্বীকৃতি পায়। এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, যখন শাসনব্যবস্থা মেয়েদের মর্যাদা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।
বিএনপি ভবিষ্যৎ নীতিমালায় এ ধরনের ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। এর মাধ্যমে কিছু মৌলিক উদ্যোগ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন:
১. পরিবারের নারী প্রধানের নামে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু, যাতে সহায়তা সরাসরি পরিবারের মূল স্তম্ভের হাতে পৌঁছায়।
2. নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ, ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা।
3. শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ সম্প্রসারণ, যাতে শহর বা গ্রামে থাকা প্রতিটি মেয়ে দক্ষতা অর্জন করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।
4. নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দলে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, রাজনীতি ও শাসনে তাদের উপস্থিতি বাড়ানো।
5. মর্যাদা ও স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করে মেয়েদের ভয়মুক্ত জীবন গড়ার ব্যবস্থা।
6. পরিবারের কল্যাণ, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় গুরুত্ব দেওয়া।
শেষে তিনি বলেন, আমরা শূন্য শব্দে বিশ্বাস করি না, বরং বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে কাজ করি। প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের সঙ্গে দেশের রাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব থাকবে, বাধা হয়ে না।