বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের কারো মার্কা বা নির্বাচনী প্রতীকের জন্য কোন ধরনের অবাঞ্ছিত চাপ বা টানাটানি আমরা সহ্য করব না। তিনি প্রশ্ন করেছেন, ধানে শীষের ওপর এই ধরনের অস্বাভাবিক চাপ কেন? তারা বলেন,’শাপলা মার্কা না দিলে ধানের শীষ বাতিল করতে হবে’—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এটা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ধানের শীষ প্রতীকের উপর অপ্রতিরোধ্য চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে শহীদ নাজিরউদ্দিন জেহাদের স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে, বুধবার (৯ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের এক আড়াই ঘণ্টা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, নির্বাচন কমিশনের সামনে দুটি পথ খোলা: এক, শাপলা প্রতীক স্বীকৃতি দেওয়া, বা দুটি, ধানের শীষ ও সোনালি আঁশ প্রতীক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া।
মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু ব্যক্তি বা দল হুমকি দিচ্ছে, ‘তাদেরকে যদি অন্য মার্কা দেওয়া না হয়, তাহলে আমাদের ধানের শীষ প্রতীকও বাতিল করতে হবে’। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে জানান, ‘আমরা কারো মার্কা বা প্রতীক নিয়ে আলোচনা করিনি। তাহলে, এই ধরনের টানাটানি কেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ফেরার একমাত্র পথ। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সারা দেশে ধানের শীষের স্লোগান উঠেছে, যা প্রমাণ করে এটি অপ্রতিরোধ্য। ধানের শীষ বিজয়ী হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চক্রান্তকারীরা পিছিয়ে পড়বে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরলে দেশের মানুষই চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবেন। এর জন্য একমাত্র পথ হলো, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কিছুAnnouncements বা রাজনৈতিক দল এককভাবে আইন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, তারা যেনো দীর্ঘ সংগ্রাম করে এসেছে—শ্রেণি, স্বাধিনতা ও গণতন্ত্রের জন্য। তারা বারবার সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে। দুর্ভাগ্য, তাদের লড়াই কখনোই যেনো হাড় ভাঙা আঘাত নয়। তবে তারা বারবার উঠে দাঁড়িয়েছে, আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় হাসিল করেছে।’
হাসিনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘হাসিনা’ নামটি যদি সম্মানজনকভাবে মনে করা হয়, তাহলে তার জন্য একটু শান্তি বা সম্মান থাকবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তিনি দেশের বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দিকসহ মোট দেশের সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। তার শাসন আমলে দেশের দুর্নীতি, অব্যবস্থা ও অস্থিরতা আরও বেড়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘কিছু মানুষ বা সংগঠন খুবই মনোযোগ দিয়ে JULY আন্দোলনকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করছে। তবে বলছি, বিএনপি সব সময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে এসেছে। দেশের জন্য তাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে এবং সেটা আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে চলবে।’