খুলনা নগরীর ঐতিহাসিক শহিদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত গণসংবর্ধনা ও সমাবেশে প্রধান অতিথি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমাধান শুধুমাত্র নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের মধ্যদিয়েই সম্ভব। তিনি আরও বলেন, যে লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন যে, সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণ এক হয়ে দেশের স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে সুন্দর একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হবে।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আরো জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং ভোটের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জরুরি। তিনি বলেন, জোটের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বর্তমানে এই দাবিতে সমর্থন দিয়ে কাজ করছে। এ দাবি উপেক্ষা করে যেকোনো অপ্রকাশ্য ও একতরফা নির্বাচন দেশের জন্য ক্ষতিকর। তিনি তার মত মনে করেন, আগে দেশের ব্যাপক সংস্কার এবং দায়ের আঘাত থাকা গণঅভ্যুত্থান, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় আন্দোলন চলতে থাকা প্রয়োজন।
তিনি জানান, গত ২৪ আগস্টের পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশে কিছু ইতিবাচক রাজনৈতিক সূচনা দেখা গেলেও, এখন আবার পেশীশক্তির প্রদর্শনী শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন। এই ধরণের পরিস্থিতি একদিকে আবারও পুরনো ফ্যাসিবাদী কায়দায় নির্বাচন আয়োজনের ষড়যন্ত্র বলে মনে হয়। তিনি স্পষ্ট করেন যে, নির্বাচনের আগেই যথোপযুক্ত আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়াও সকল গণহত্যার বিচার ও আট দলের ষড়যন্ত্রের নির্মূলের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন।
সমাবেশটি নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড়, সঙ্গীতা মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি ছাড়াও মহানগর আমীর মাহফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এড. মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মহানগর সেক্রেটারি এড. শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সহকারি সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনসহ বিভিন্ন উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও জনতা এক হয়ে জনগণের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি মনে করেন, ভোটাধিকার রক্ষা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবাইকে একসাথে থাকতে হবে। বর্তমান সরকার যদি দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র রক্ষায় সচেষ্ট না হয়, তবে দেশের অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকবে। সবাইকে সচেতন ও সক্রিয় থাকতে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য নয়, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।