চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য পরিস্থিতিতে আবারও উত্তেজনা বেড়ে গেছে। আগামী মাস থেকে চীনের থেকে আমদানি করা পণ্যগুলোর ওপর আরও ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণা তিনি শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের মাধ্যমে দেন। ট্রাম্প জানান, চীনের অবিচারপূর্ণ বাণিজ্যনীতি ও প্রযুক্তি খাতে আক্রমণাত্মক মনোভাবের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এই কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রেও মার্কিনা নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে। এর আগে এক পোস্টে ট্রাম্প চীনের বিরূপ নীতির কঠোর সমালোচনা করেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে চীন বিশ্বকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে, যা একটি শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ। ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিলের হুমকিও দেন, যদিও পরে তিনি জানান যে, ঐ বৈঠকটা এখনো ‘চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়নি’, তবে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। এই ঘোষণা পেলে মার্কিন পুঁজিবাজারে দ্রুত দরপতন দেখা গেছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও গাড়ি খাতের শেয়ারমূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে পড়ে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিরল খনিজ রপ্তানিতে কঠোরতা আরোপের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের মধ্যেই উত্তেজনা আরও বাড়ছে। এই খনিজ ব্যবহৃত হয় উচ্চপ্রযুক্তি পণ্য, স্মার্টফোন ও গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে বেইজিংও বিরল খনিজের রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। এর ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়, এমনকি কিছু সময়ের জন্য গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। একই সময়ে, চীন মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত শুরু করে এবং এর ফলস্বরূপ কোয়ালকমের একটি চিপ নির্মাতা কোম্পানি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে যায়। এছাড়াও সম্প্রতি চীন মার্কিন-সম্প্রক্ত জাহাজ থেকে নতুন বন্দরের জন্য ফি আদায়ের ঘোষণা দেয়, যার আওতায় মার্কিন কোম্পানির জাহাজগুলোও পড়বে। গত মে মাস থেকে এই দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়; বিশ্লেষকদের মতে, এই সব পদক্ষেপই সম্ভবত নতুন এক বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনাকে নির্দেশ করছে।