শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রান। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ছিলেন নাহিদা। তার করা প্রথম বলেই চার মেরে সমীকরণ সহজ করে দেন ডে ক্লার্ক। এরপর পরের বল ডট খেলার পর, তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি ৩ বল হাতে রেখেই দলের জয় নিশ্চিত করেন। এই হারের মাধ্যমে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা অনেকটাই দূরবর্তী হয়ে গেছে বাংলাদেশের জন্য।
বিশাখাপত্তমে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা করে ২৩২ রান। দলের হয়ে অপরাজিত ফিফটি করেন স্বর্ণা। তার পরিণত ব্যাটিং এবং ধৈর্য্যপূর্ণ ইনিংসের কারণে বাংলাদেশের স্কোর মোটামুটি শক্তিশালী হয়।
জবাবে, ৪৯ ওভারে ৩ বল বাকি থাকতেই দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান সংগ্রহ করে এবং ম্যাচ জেতার বন্দরে পৌঁছে যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার শুরু খুবই হালকা ছিল, প্রথম ওভারে নাহিদার শিকার হন ওপেনার তাজমিন ব্রিটস। প্রথম উইকেট হারানোর পরই লরা উলভার্টের নেতৃত্বে একমাত্র জুটিতে দাঁড়িয়ে যায়, তিনি ৩১ রান করেন। তবে, অধিনায়ক হঠাৎ রান আউটে পড়ে গেলে দ্রুতই আরও তিন উইকেট হারায় তারা।
এখনও ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে এই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে থাকলেও, ষষ্ঠ উইকেটে মারিয়ানা কাপ এবং চার্লি ট্রায়ন ৮৫ রানের জুটি গড়ে দেন। শেষমেশ, কেবল ৫৬ রান করে কাপ আউট হয়ে যান, আর ট্রায়ন করেন ৬২ রান।
অবশেষে, ডে ক্লার্ক দলের জন্য দারুণ কিছু করেন। ২৯ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশের দুই ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক ও ফারজানা হক সাবধানীভাবে ব্যাট করতে থাকেন। এতে বাংলাদেশের রান রেট কিছুটা কমলেও ভালো সূচনা হয়। লম্বা সময় পর উদ্বোধনী জুটিতে ফিফটি আসে। ঝিলিক ২৫ রান করে ফিরে যাওয়ার পর, ফারজানা ৭৬ বলে ৩০ রান করেন।
তিনে নামা শারমিন আক্তার আবার দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন, নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ৭৭ রানের জুটি গড়ে। জ্যোতি ৪২ বলে ৩২ রান করেছেন। জ্যোতি ফিরে গেলেও, শারমিন ৭৪ বলে ফিফটি তুলে নেন, যা বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম। তাঁর এই পারফর্মেন্সে বাংলাদেশের শক্ত ভিত গড়ে ওঠে।
অধিনায়ক নার্গিসের কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি ৫ নম্বর বিস্তৃত হন এবং মিডল অর্ডারে সফল হন। স্বর্ণা ৩৪ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি ছুঁয়ে দ্রুত আঙিনায় পৌঁছান, যা বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম।
শেষে, রান উৎসবে যোগ দেন রিতু মণি, তিনি ৮ বলে অপরাজিত ১৯ রান করেন। তার এই ধারাবাহিক পারফর্মেন্স ও স্বর্ণার আধিপত্যে বাংলাদেশ অবশেষে এই রোমাঞ্চকর ম্যাচ হারলেও হতাশায় ডুবে না, ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফর্মেন্সের প্রত্যাশা রেখে।