সংসদ নির্বাচনের সময় نزدیک আসার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির অন্দরো আরেকটি উত্তপ্ত বিষয় হয়ে উঠেছে প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া। আগামি নির্বাচনে কে চলমান আসনে প্রতিনিধিত্ব করবেন, সেই প্রশ্ন এখন আওয়ামী লীগ নয়, বরং বিএনপির দিকেই বেশি মনোযোগ কেন্দ্রিত। কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাদের সমর্থকদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে প্রার্থীদের তালিকা, যেখানে তাদের জনপ্রিয়তা, যোগ্যতা, পরিশ্রম এবং এলাকার রূপান্তর ভবিষ্যত প্রমাণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বলাবাহুল্য, সম্ভাব্য প্রার্থীদের জন্য প্রচার ও প্রচারণা চালানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে যেন সবার আগে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হওয়া যায়।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা অনুসারে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তার জন্য বিএনপি ইতিমধ্যে প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া জোরালো করে তুলেছে। জয়যুক্ত হওয়ার জন্য সবাই চেষ্টা করছে নিজ নিজ প্রচেষ্টাকে শাণিত করার। বিভিন্ন দলের আগাম ঘোষণা বা আগ্রহের ভিত্তিতে প্রাথীদের চষে বেড়ানোসহ নির্বাচনী সমীক্ষাও চলছে। এই পরিস্থিতিতে, বিএনপি তাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে শিগগিরই প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রমতে, ভরসা করে থাকা একজন নির্ভরযোগ্য নেতা বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে তিনি নিজে এই তালিকা পুরোপুরি যাচাই করবেন এবং তারপর চূড়ান্ত করে দলের শীর্ষ নেতা ও শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অধিকাংশ নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রার্থী বাছাইয়ে সৎ, যোগ্য এবং কার্যকর নেতাদের ওপর জোর দেওয়া হবে। এলাকায় ‘ক্লিন ইমেজ’, জনপ্রিয়তা, ত্যাগমূলক অঙ্গীকার, সংগঠনের অবদান এবং দলীয় কোন্দল থেকে মুক্ত হওয়ার যোগ্যতা—এই পাঁচটি মাপকাঠির ওপর ভিত্তি করে প্রার্থী নির্বাচন হবে। এ ছাড়া, স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘদিন সংগঠনে সক্রিয় থাকা এবং মানসিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হবে।
নেতাদের মধ্যে একাধিক জরিপ ও মতামত নেওয়া হয়েছে, যার ফলাফলের ভিত্তিতেই তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রার্থী হিসেবে যারা যোগ্যতা সম্পন্ন, তৃণমূলের ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য, ও দলীয় মূল্যবোধের প্রতি আন্তরিক, তাদেরকেই নির্বাচিত করা হবে। দলের অভ্যন্তরীণ অন্দরো আলোচনা অনুযায়ী, সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের জন্য প্রথমে অনানুষ্ঠানিকভাবে সবুজ সংকেত দেওয়া হবে, যাতে তারা প্রচার প্রচরণা চালাতে পারেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হলে, পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে চূড়ান্ত মনোনয়ন নিশ্চিত করা হবে।
শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, সব প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং তালিকা পরিবর্তনের সম্ভাবনাও আছে। দেশের পরিস্থিতি, বৃহৎ রাজনৈতিক চাহিদা ও জোটগঠনের বিষয়ে সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। দলটির তরুণ ও প্রবীণ উভয় প্রজন্মের মধ্যে সমন্বয় করে মনোনয়ন প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতেও শক্তিশালী মনোনীত প্রার্থী হয়।
অবশ্য, দলের ভেতরে এবং বাইরে কিছু নজরদারি ও সুরক্ষার জন্য প্রত্যাশিত তালিকা প্রকাশের সময়ই কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দলীয় নেতৃত্ব এ ব্যাপারে সব দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চিত করেছেন, আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো দলীয় নেতা কিংবা আঞ্চলিক প্রভাবের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং তৃণমূলের জনপ্রিয়তা, যোগ্যতা ও দলের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।