এখানে উল্লেখ্য যে, জুলাইয়ের সনদে আমরা সব বিষয়ে স্বাক্ষর করব, তবে পাশাপাশি ভিন্নমত বা বিভেদরেখা সব সময় স্পষ্টভাবে উল্লিখিত থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এই কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্টের মাধ্যমে আমাদের ভিন্নমতের বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করা হবে, কারণ এই নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার এখতিয়ার আছে এবং এজন্যই আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে আলোচনা করেছি।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সালাহউদ্দিন আরও বলেন, আমাদের দেশ এই সংস্কার চায় এবং আমরাও চাই। যে কোনও দল ক্ষমতায় এলে বা জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতেই হবে।
তিনি বলেন, ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় সংবিধান অনুযায়ী স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পূর্বে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন। সবাই যাতে অংশগ্রহণ করে এবং এই ঐতিহাসিক দলিলটি সংরক্ষণ করে, স্বাক্ষর করে।
সালাহউদ্দিন জানান, আমরা সবাই এতে সম্মত হয়েছি। তবে কিছু বিষয়ে আলোচনা ও মতভেদ থাকলেও, তারা সব দল অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জুলাইয়ের সনদ প্রণয়ন ও অন্যান্য কার্যক্রমের মূল লক্ষ্যও এই নির্বাচনই, যা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বস্ত হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই সনদ ও নির্বাচন কার্যক্রমের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, এই সংস্কার সারা জাতি চায় এবং আমরাও চাই। বাংলাদেশে যে কোনও ক্ষমতাসীন দল বা অধিক সংখ্যক আসনপ্রাপ্ত দল এই সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। গণভোটের মাধ্যমে জনগণের পক্ষ থেকে সার্বভৌম ক্ষমতা সংসদকে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে এই সংস্কারগুলো জাতীয় স্বার্থে গ্রহণ করা হবে। এগুলোর জন্য গণভোটের আয়োজন করা হবে, যাতে জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আলোচনা মূলত সেই বিষয়ে ছিল যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো একমত বা অমত রয়েছে। যেখানে দ্বিমত বা ভিন্নমত রয়েছে, সেগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যদি জুলাইয়ের সনদ স্বাক্ষরিত হয় এবং এতে ভিন্নমত থাকলে, তখন গণভোটে একমাত্র প্রশ্ন উঠবে—“এই সনদ আপনার পক্ষে কি?”। আশা করা হচ্ছে, এই ভোটে প্রচুর মানুষ অংশ নেবে, কারণ সাধারণ জনগণ এই সংস্কারের পক্ষে।
অবশেষে তিনি বলেন, সব দল ও জনগণের সমর্থনে এই সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়িত হবে। তার কথায়, জনগণই এই সংস্কারের সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেবে এবং তারা এই পরিবর্তনকে স্বীকৃতি দেবে জাতীয় স্বার্থে।