পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির আবারও সরাসরি পারমাণবিক হুমকি দিয়ে সতর্ক করেছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতকে। আফগানিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই তিনি এমন দৃঢ় মন্তব্য করেছেন, যা দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর), পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি (পিএমএ) কাকুলে একটি পাসিং আউট প্যারেডে অংশ নেয়ার সময় তিনি এই বক্তব্য দেন। সেখানে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক শক্তি, প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা নিয়ে তিনি নানা জোরালো কথাবার্তা উচ্চারণ করেন, বিশেষ করে ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন।
আসিম মুনির বলেন, “পারমাণবিক পরিবেশে যুদ্ধের কোনও স্থান নেই, তবে যদি কেউ সামান্য উসকানিও দেয়, পাকিস্তান দ্বিধাহীন ও চূড়ান্ত জবাব দেবে।” তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান এমন এক প্রতিক্রিয়া দেখাবে যা শত্রুর কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তিনি এও উল্লেখ করেন, যদি আবার কোনও সংঘাত শুরু হয়, তবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া শুধু কঠোরই থাকবে না, বরং তা শত্রুর বিশ্বাসকে ভেঙে দিতে পারে।
ভারতের প্রতি কঠোর ভাষায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেন, “পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো আগ্রাসী মনোভাব না থাকলেও, প্রতিরক্ষা ও প্রতিশোধের জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। প্রায়শই ভারতের সাথে যোগাযোগের দুরত্ব কমে আসায়, আমাদের অস্ত্রের প্রভাব তাদের ভৌগোলিক সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
এখানে তিনি ভারতের সামরিক কৌশল ও নীতিকে ‘কৌশলগত অন্ধত্ব’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ ছাড়া, বলেন, শত্রু যদি উচ্চাকাঙ্ক্ষায় পরিচালিত হয় তাহলে পাকিস্তান আবারও বিজয়ী হবে।
হুঁশিয়ারির পাশাপাশি তিনি মে মাসে চালানো সামরিক অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’-এর উল্লেখ করেন, যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার প্রমাণ।
অতিরিক্ত, দাবি করেন পাকিস্তানের বাহিনী বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, এস-৪০০ সিস্টেমের মতো আধুনিক প্রযুক্তি লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে এবং বহুমাত্রিক যুদ্ধের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।
নিজের বক্তব্যে তিনি শুধু ভারতকেই নয়, আফগানিস্তান বিষয়ে ও কঠোর ভাষায় কথা বলেন। পাকিস্তান সেনাপ্রধান বলেন, দেশটির ভেতর থেকে পরিচালিত ‘প্রক্সি বাহিনী’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তালেবান সরকারকে সাবধান করে দেন। তিনি বললেন, পাকিস্তানে চলা সন্ত্রাসী কার্যক্রম একেবারেই বরদাশত করা হবে না।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া তাদের ভাবনায়ও বাধা দেয়ার মতো হবে। এর ফলস্বরূপ, তাদের জন্য বড় ধরনের সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।
সূত্র: জিও নিউজ