খুলনায় জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (নিমকো)-এর উদ্যোগে গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ বিষয়ক এক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন। এই কর্মশালায় খুলনায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী মূল বক্তৃতায় সভাপতিত্ব করেন মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মুহম্মদ হিরুজ্জামান।
বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন, দেশের প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টাইফয়েডের কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দিয়ে সুরক্ষা দেয়ার জন্য একটি বৃহৎ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনকে সফল করতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। গণমাধ্যম এই প্রচার ও জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কারণ সাধারণ মানুষ সংবাদকে গুরুত্বের সাথে বিশ্বাস করে। তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের মধ্যে ভ্যাকসিনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা দরকার। একই সঙ্গে, টিকাদান প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা থাকলে তা মিডিয়ার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ন। এই ক্যাম্পেইনটি একদিকে যেমন শিশুদের জন্য নিরাপদ জীবন সমাজ গঠনে সহায়তা করবে, অন্যদিকে সুস্থ জাতি গঠনের পথ প্রশস্ত করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। মহাপরিচালক বলেন, গণমাধ্যম তাদের দায়িত্বশীল লেখনী ও প্রচার মাধ্যমে অন্ধবিশ্বাস দূর করতে পারে এবং জনমনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ হুসাইন শওকত বলেন, বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি বিগত কয়েক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। চলমান এই টাইফয়েড ক্যাম্পেইনও সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মিথ্যা তথ্য বা গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর তথ্যের মোকাবেলায় সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান, স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান ও ইউনিসেফের খুলনা চিফ মোঃ কাউসার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন নিমকোর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) পারভীন সুলতানা রাব্বী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল ইউপিআই কনসালট্যান্ট ডা. তাপস কুমার হালদার। এ ছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মোছাঃ মাহফুজা খাতুন, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীর, প্রেসক্লাবের আহবায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলমসহ আরও অনেকে।
এ কর্মশালায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং মোট ৬০ জন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে আজকের শিশুর সুরক্ষা এবং ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।