বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ঘটে যাওয়া আগুনের সূত্রপাত ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকেই হয়েছে বলে মনে হয়। তবে ঠিক কী কারণে আগুন লাগেছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়, এটি তদন্তাধীন। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, এই অংশ থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নানা সংস্থা ছাড়াও তদন্তের কাজ চলছে। তদন্ত শেষে আসল কারণ জানা যাবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বেবিচকের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক আরও বলেছিলেন, আগুনের সময় ১৫টি ফ্লাইট বিভিন্ন রুটে পাঠানো হয়। এ সময় বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেক যাত্রী আটকা পড়েছিলেন, যারা পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে দেন।
তিনি আরও জানান, আগুন লেগে মুহূর্তের মধ্যে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট উপস্থিত হয় এবং ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এরপর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসের আরও দল আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। আনুমানিক দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনাল, বিশেষ করে ইমপোর্ট কার্গো সেকশনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে টাওয়ার থেকে ধোঁয়া দেখা যায়, পরে আমরা ঘটনা স্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।
প্রাথমিক পর্যায়ে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশনের থেকে হলেও বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। একাধিক তদন্ত কমিটি এ ঘটনার সঠিক কারণ জানাতে কাজ করছে। সঠিক তথ্য ছাড়া কোনো মন্তব্য করা অবাঞ্ছিত বলে জানান তিনি।
বেবিচক চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, আগুন লাগার সময় উত্তর পাশে বিমানবাহিনীর হ্যাঙ্গার ও দক্ষিণ পাশে মূল টার্মিনাল ছিল। কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ও সতর্কতার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। আল্লাহর রহমতে, কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।
তিনি বলেন, ধাপে ধাপে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। ১০ মিনিটের মধ্যে বিমানবাহিনীর ঘাঁটি থেকে তিনটি ফায়ার ভেহিকল এসে পৌঁছায়। এরপর আরও ফায়ার ভেহিকল যোগ দেয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
চেয়ারম্যান জানিয়ে তুলেছেন, আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে বেশ কিছু বিমান ছিল। দ্রুত সেগুলো নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়, যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে। উভয় পাশে কাট-অফ মেকানিজম ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।