সোমবার বিকেলে তালা ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী নেতা গোলাম পরওয়ার। সেখানে তিনি বলছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একজন আহবায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টের প্রসঙ্গ তুলে, জামায়াতে ইসলামী ও নতুন দলগুলোর তুলনা করেন। তিনি বলেন, একটি দল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছে—জামায়াতের কোনো করোশনি, অংশীদারিত্বের রাজনীতি বা দেশ গঠনে তাদের কোন ভূমিকা নেই। এ ধরনের মনোভাব দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা নতুন দল, ওরা তো এ রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই পারবে, কিন্তু জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিও না।’ গোলাম পরওয়ারের মন্তব্যে স্পষ্টতঃ বোঝা যায়, তিনি এই নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে জামায়াতই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু অনেক নেতা-কর্মী দুঃখজনকভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে এই মতবাদকে সমালোচনা করছে, মানে তারা জামায়াতেরই প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, গেরিলা আন্দোলন বা চতুর্দশের সময় জামায়াতের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনি বলেন, ‘তাদের প্রতি জামায়াতের শ্রদ্ধা ও দোয়া থাকবে। অশালীন ভাষা বা অরাজনৈতিক কথাবার্তা কোনো নেতা শোভনীয় নয়।’
জামায়াতের নেতা হিন্দু ভোটের প্রসংগে বলেন, ‘হিন্দু মানে নৌকা নয়, দাঁড়িপাল্লা। যদি তারা দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেন, তারা দেশের সবচেয়ে নিরাপদে থাকবে। তারা চাইলে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে পারে, যেখানে কখনো জুলুম বা নির্যাতন থাকবেনা।’ পরওয়ার বলেন, ‘বিরোধী দল এখন বলছে—জামায়াত নিষিদ্ধ করতে হবে—এটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কথাই, যা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। সব বিতর্ক উপেক্ষা করে, জামায়াতের অগ্রযাত্রা আটকানো সম্ভব নয়। পরিবেশ বদলে গেছে; এখন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত গণজোয়ার তৈরি হয়েছে, আর তার প্রতীক হচ্ছে দাঁড়িপাল্লা।’
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ভোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের ভুল ধারণা যেনো চলে যায়, যদি তারা অন্তর্ভুক্ত হন, তারা রক্ষা পাবে। অতীতের শহিদদের স্মরণ করে বলেন, জামায়াত জনগণের অধিকার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। তিনি অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর একটি দল দখলবাজি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে, তারা মানুষের শান্তি ও ন্যায়ের রাজনীতি চায়, যার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। মূল লক্ষ্য হলো, তালা-কলারোয়ায় দুর্নীতি ও সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক মহলের সদস্য মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, সাবেক জেলা আমীর হাফেজ রবিউল বাসার, জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, ডাঃ মাহমুদুল হক, জেলা সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম সহ আরও অনেকে। আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার অনুসারী এই সমাবেশে অংশ নেন।