জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর আন্দোলন ছিল এক কৌশলগত রাজনৈতিক প্রতারণা। এই আন্দোলনটি পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে ঐক্যমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত ও বিভক্ত করা যায়। এছাড়াও, এর মূল উদ্দেশ্য ছিল গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে দেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের মূল প্রশ্নগুলো থেকে জাতীয় সংলাপকে অন্যদিকে টেনে নেওয়া।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, তথাকথিত ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) আন্দোলন’, যা জামায়াতে ইসলামী শুরু করেছিল, প্রকৃতপক্ষে তা ছিল এক পরিকল্পিত রাজনৈতিক চাতুরী। তিনি বলছেন, এই আন্দোলনটি ইচ্ছাকৃতভাবে গঠিত হয়েছিল ঐক্যমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়াকে ভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত করার জন্য এবং জাতীয় সংলাপকে জনমতের গণঅভ্যুত্থানের আলোকে রাষ্ট্র ও সংবিধানের পুনর্গঠনের মূল বিষয়ে মনোযোগ কমানোর জন্য।
নাহিদ উল্লেখ করেন, ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার যে দাবি উঠেছিল, তা ছিল একটি সাংবিধানিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে। আমরা এই মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম এবং ব্যাপক জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতার মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম।
তবে, জামায়াত ও তাদের মিত্ররা এই প্ল্যাটফর্মকে ছিনিয়ে নিয়ে এটিকে শুধু প্রযুক্তিগত পিআর ইস্যুতে সীমাবদ্ধ করে দেয়, এবং নিজেদের স্বার্থের জন্য দর-কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের উদ্দেশ্য কখনোই সংস্কার নয়; বরং ছিল কৌশলী অপব্যবহার।
নাহিদ বলেন, জামায়াতে ইসলামি কখনোই সংস্কার আলোচনা বা সংস্কারমূলক প্রস্তাবে অংশ নেয়নি— না জুলাই অভ্যুত্থানের আগে, না পরে। তারা কখনো কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব দেয়নি, কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি, এমনকি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিও কোনো অঙ্গীকার দেখায়নি।
তিনি আরও বলেন, ঐক্যমত্ম্য কমিশনের মধ্যে তাদের আকস্মিক সংস্কার সমর্থন কোনো বিশ্বাসের প্রকাশ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি কৌশলগত উপায়—প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির অন্তর্ঘাত। আজ বাংলাদেশের মানুষ এই প্রতারণা স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে। তারা সত্যে উজ্জীবিত হয়েছে এবং আর কখনো মিথ্যা সংস্কারবাদী বা ধূর্ত শক্তির দ্বারা প্রতারিত হবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং এই দেশের স্বতন্ত্র সার্বভৌম জনগণ কখনো এই অসৎ, সুযোগ সন্ধানী ও নৈতিক দেউলিয়া শক্তিগুলোর হাতে শাসনকাঠি তুলে দেবে না।