জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের বক্তব্যের কঠোর প্রতিক্রিয়া দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলের নেতারা বলছেন, পরওয়ারের বক্তব্য ছিলো অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ, যা তাদের কাছে স্বচ্ছন্দে গ্রহণযোগ্য নয়। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় এক সমাবেশে পরওয়ার এনসিপির নাম না নিয়েই মন্তব্য করেন, ‘একটা দল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছে আমরা সংস্কার, অংশীদারিত্বের রাজনীতি, দেশ গঠন, অভ্যুত্থানে কোনো ভূমিকা রাখিনি। ওরা নতুন ছাত্রদের দল—রাজনীতিতে জামায়াতের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে আরও অনেক দূর যেতে হবে। জন্মের সময়ে বাবা-মার সঙ্গে পাল্লা দিও না।’ উল্লেখ্য, পরওয়ার ছাত্রদের দল উল্লেখ করে যখন বলেন, তথাপি তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি মূলত জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের রাজনৈতিক দল এনসিপিকে টার্গেট করে কথা বলছেন। এই বক্তব্যের মাধ্যমেই জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে বিরোধ নতুন করে প্রকাশ পেয়েছে। জামায়াত নেতাদের এমন মন্তব্যের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে এνάসিপির মধ্যে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক সামান্তা শারমিন গণমাধ্যমে বলেন, ‘রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনাগুলো একপক্ষের পক্ষ থেকে অন্যপক্ষকে ব্যঙ্গ বা উপমা করে থাকে। তবে পরওয়ারের এমন অসৌজন्यमূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য আমরা মানতেই পারছি না। ওনারা সিনিয়র রাজনীতিবিদ, বয়সে আমাদের বাবা-দাদাদের মতো, ওনাদের কাছ থেকে এমন বক্তব্য আশা করি না।’ অন্যদিকে, সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবও পরওয়ারের বক্তৃতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘রাজনীতিতে কারো বাবা হইতে চাওয়া এক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিগত সমস্যা। গণঅভ্যুত্থানই আসলে সকলের জন্ম। এনসিপির জন্মও এই প্রেক্ষাপটে। বর্তমানে সব রাজনৈতিক দলের জন্মই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। যখন বিপদ আসে, তখন সবাই নেতৃত্বের অধীনে আন্দোলন করে। তবে বিপদ কেটে গেলে নিজেকে নেতৃত্ব দাবি করা অসদাচরণ।’ এদিকে, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের জানান, পরওয়ারের বক্তব্য ছিলো ‘স্নেহের অবস্থান’ থেকে। তিনি বলেন, ‘আসলে তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি। দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে স্নেহপূর্ণ অবস্থান থেকে মত প্রকাশ করেছেন। আমাদের মধ্যে একতা ও সহযোগিতা রয়েছে, আর কিছু নয়।’ এই ঘটনার পর উভয় পক্ষই তাদের বক্তব্য পঞ্চমুখ। তবে প্রতিক্রিয়া ও বিরোধ এখনও বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।