বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হোক, তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, এর জন্য প্রথমত প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ করে তোলা জরুরি, যাতে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বৈঠক উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় পৌঁছায়, নেতৃত্ব দেন মির্জা ফখরুল নিজে। তাদের সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের মূল দাবি হলো সরকারের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। যদি কোনও দলীয় ব্যক্তি বা কিছু সদস্য দলে থেকে থাকেন, তাদের অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সচিবালয়ে বর্তমানে যাঁরা আছেন এবং যারা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট বলে পরিচিত, তাঁদের সরিয়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তারা নিয়োগের জন্য বলা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে প্রশাসন ও পুলিশ বাহিক্ষেত্রে বিশেষ করে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমাদের আহ্বান। বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের বিষয়েও কথা বলা হয়েছে, যাতে উচ্চ আদালতের বিচারকদের নিরপেক্ষ এবং স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন—এ ব্যাপারেও তারা পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল জানান, তারা বলেছে, পুরোনো সরকারের কিছু স্বার্থানুকূল কর্মকর্তা এখনো দায়িত্বে আছেন, যাদের অপসারণ করতে হবে। বিশেষ করে পুলিশ ও প্রশাসনিক ক্যাডারে নিরপেক্ষ নিয়োগের জন্য তাদের আহবান জানানো হয়েছে।
এছাড়া, বিচার বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে, যেখানে অপ্রয়োজনীয় ফ্যাসিস্ট বা স্বার্থানুকূল দোসরদের সরিয়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে এ বিষয়গুলো জানানো হয়েছে, যেহেতু তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত।
অবশেষে, সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিল এবং আজ সময় পেয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা রয়েছে, ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনিক পরিস্থিতি ও দেশের সামগ্রিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা করবে এই বৈঠকে।