বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সম্প্রতি জুয়া এবং প্রতারণায় যুক্ত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে। এই অ্যাকাউন্টগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে এই মাস পর্যন্ত ফ্রিজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর একজন প্রতিনিধি এ তথ্য জানান। এ সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই, এনএসআই, এনটিএমসি, সিআইডি, বিএফআইইউ, মোবাইল অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি জানান, এসব অ্যাকাউন্টগুলো ব্যবহার করে জুয়া খেলা ও প্রতারণামূলক চক্রগুলো বিভিন্ন ধরনের অবৈধ লেনদেন চালাচ্ছে। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মাধ্যমে এসব জাল বা অবৈধ লেনদেনের বার্তা বিনিময় বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু কার্যকরী নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যারা এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে, তাদের লেনদেনের বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে রিপোর্ট দেওয়া হবে।
ডিজিএফআইর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেদারসে বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, ভুয়া সিম বিক্রি, মানবদগোটার আঙুলের ছাপ জালিয়াতি, বিকাশের নকল অ্যাপ তৈরি এবং ডার্ক ওয়েবে নাগরিকদের ডেটা পাওয়া যাচ্ছে। এসব অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে চক্রগুলো।
এদিকে, বিশেষ অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, সরকার জুয়া ও অনলাইন অবৈধ লেনদেনের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি করছে। একাধিক নোটিশের পরও কিছু অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার চলছে, যা দ্রুত বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো নোটিশ ছাড়াই যেকোনো মুহূর্তে এই পোর্টালগুলো বন্ধ করে দিতে পারি।’ গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪,৮২০টি এমএফএস নম্বর ও ১,৩৩১টি ওয়েবপোর্টালের লিংক বন্ধ করা হয়েছে।
তবে, এ ক্ষেত্রে কিছু চক্র প্রতিরোধে নতুনভাবে ওয়েবসাইট, অ্যাপ ও নম্বর ব্যবহার করছে। আইপি বদলিয়ে, ওয়েবসাইটের নাম পরিবর্তন করে আবার চালু করা হচ্ছে। এখনো তারা ভার্চুয়াল অ্যাপ ব্যবহার করে অবৈধ অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের বৈঠক ও নজরদারির মাধ্যমে এই চক্রগুলোকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করার লক্ষ্য রয়েছে।