আগামী নভেম্বরের মধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি একটি বৃহৎ জোট গঠনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর অংশ হিসেবে তিনি আলোচনা করে যাচ্ছেন ন্যাশনাল কনসোলিডেশন পার্টি (এনসিপির) সঙ্গে। তবে, এ জোটে যুক্ত হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরপিও (নির্বাচনী আচরণবিধি) সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, বেশ কিছু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, ২০/১ উপধারার অধীনে জোটভুক্ত দলগুলো অন্য দলের নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে—এমন পরিবর্তনের বেশ কিছু দল সম্মত ছিল। তারা আশঙ্কা করেছিলেন, যদি এই সংশোধনী পাস হয়, তবে ছোট দলগুলো আর বেশি সুবিধা পাবেন না। এর ফলে, ছোট দলগুলোর নেতাদের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হবে না বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এই আরপিও সংশোধনী একতরফাভাবে পাস হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি চাইছে বহুদলীয় একটি সমৃদ্ধ সংসদ। এজন্য তিনি পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানান। এরপর দলটি চিঠি দিয়ে আপত্তি জানাবে বলে জানানো হয়।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন এক-এগারোর সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময় কারামুক্ত হয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান পরিবারসহ। তখন থেকে তার অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন মামলা হয়, যার মধ্যে পাঁচটি সাজা হয় এবং শতাধিক মামলার প্রক্রিয়াও চলমান থাকে। এসব মামলা ও তার বক্তব্যের প্রচার নিয়ন্ত্রণে আবদ্ধ ছিল।
তবে, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতা আন্দোলন শুরু হলে পরিস্থিতি বদলে যায়। তারেক রহমান দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নেন। সব মামলা থেকে তিনি ইতোমধ্যে খালাস পান, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে দেশে ফিরেননি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন। এরপর থেকে ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনের তফসিল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগে তিনি দেশে ফিরবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে মূল নেতৃত্ব ও প্রার্থী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে ধারণা। নিজে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারেও তিনি আগেই আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্তর্দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, আগামী নির্বাচনে তারেক রহমান অংশ নেবেন। নির্বাচিত হলে তিনি হয়তো খালেদা জিয়াকেই প্রধানমন্ত্রী করবেন—এটি এখনো স্পষ্ট নয়। দলের তথ্যানুযায়ী, যদি খালেদা জিয়া সুস্থ ও সক্ষম হন, তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। অন্যথায়, সম্ভাব্য হিসেবে তারেক রহমানই হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করা হচ্ছে।






















