আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি আরপিওর ২০ ধারায় সংশোধনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা চায় জোটবদ্ধ দলগুলো নিজেদের পছন্দের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারুক, যা তাদের রাজনৈতিক অধিকার ও নির্বাচনী মূলনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করেন। ওই আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।
বৈঠক শেষে ইসমাইল জবিউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘প্রথম থেকেই জানি, বাংলাদেশে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল তাদের চাহিদা অনুযায়ী জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তারা নিজেদের প্রতীক বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদ্ধতিতে কখনো দ্বন্দ্ব বা সমস্যা হয়নি। তবে সম্প্রতি সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত বদলানোর চেষ্টা চলেছে, যা দেশের নির্বাচনী চর্চায় অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের অনুসারে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ বৈধ ও গণতান্ত্রিক। আমরা কখনো দাবি করিনি এই প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, জোটবদ্ধ হলেও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে, যা বিএনপির নীতিমালা ও আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের সংশোধনীগুলো আমাদের পছন্দ নয়; আমরা এটা গ্রহণ করছি না।
বিএনপি জোটের মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনে জয় লাভ করা। ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেছিলেন, ‘দল বা জোটের নিজের পছন্দের প্রতীকের অধিকার সব রাজনৈতিক দলেরই থাকা উচিত। আমাদের কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়, মূল প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরপিওর ২০ নম্বর অনুচ্ছেদ পূর্বের মতোই রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। সরকারের উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছেও এই বিষয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে। আশা করি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই সংশোধনটি আর হবে না, এবং রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আইনি উপদেষ্টা মহোদয়ের দ্বারা একটি গিন্টেলম্যানস অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে, যেটা অনুসারে এই বিষয়ে এগিয়ে যাওয়া হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, এই চুক্তি অনুযায়ীই সব কিছু পরিচালিত হবে। কিছু নতুন আলোচনা বা সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হবে না।’
অন্ততঃ প্রকাশিত বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা দলীয় প্রতীকের অধিকার সবসময়ই রক্ষা পেয়েছে। তবে, যখন তারা জোটবদ্ধ হয়, তখন তারা তাদের নিজস্ব প্রতীকের বদলে অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই নিয়মই দীর্ঘদিন থেকে কার্যকর এবং এটি দেশের নির্বাচনী প্রথার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’






















