তিন বছর ধরে চলা ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধের কারণে সুদান এখন মানবিক বিপর্যয়ের শিকার। লাখ লাখ মানুষ সরকারি লড়াইটার কারণে বাস্তুচ্যূত হয়েছে, এবং খাদ্য সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করায় দেশটিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ঘনিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই পরিস্থিতিকে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি না করলে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটবে বলে সতর্ক করা হচ্ছে। এই সংকটের কারণে এখন বিশ্বের অন্যতম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, সুদানে বর্তমানে প্রায় তিন কোটি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তাদের মধ্যে ৯৬ লাখ মানুষ দেশটির ভেতরে বাস্তুচ্যূত হলেও অন্যরা পার্শ্ববর্তী দেশে চলে গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর উপ-উচ্চকমিশনার কেলি ক্লেমেন্টস বলেছেন, এই গৃহযুদ্ধের ফলে সুদানবাসীর এক-তৃতীয়াংশই গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
অপর দিকে, ইউনিসেফের কর্মকর্তা টেড চাইবান জানিয়েছেন, এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ১৪ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে এবং মোট শিশুর চার-পঞ্চমাংশ—অর্থাৎ ১ কোটি ৪০ লাখ শিশু—বিদ্যালয় থেকে বাইরে রয়েছে। শুধুমাত্র উত্তর দারফুর অঞ্চলে এই বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-এর কর্মকর্তা ভ্যালেরি গুয়ারনিয়েরি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে দুর্ভিক্ষঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে ১৮ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হলেও বেশ কিছু অঞ্চল এখনো যুদ্ধের কারণে প্রবেশ করতে পারছে না।
এই অবস্থা মোকাবিলার জন্য জাতিসংঘের চার সংস্থা দ্রুত তহবিল সহায়তা, মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ ও শান্তি নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।






















