ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মনে করেন, দুর্বল শাসন কাঠামোই বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের একটি মূল কারণ। তিনি বিশ্লেষণ করেন, শক্তিশালী ও কার্যকর কোনো দেশের সরকারের পতন হয় না; বরং দুর্বল শাসন ব্যবস্থা অনেকসময় দেশের শাসনতন্ত্রের ভঙ্গুরতা তৈরি করে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও অন্যান্য দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকারের পরিবর্তনের পেছনে একই ধরনের দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোর ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দোভাল বলেছেন, রাষ্ট্রের মূল শক্তি হলো কার্যকর শাসনব্যস্থা, যা নাগরিকের আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। শনিবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি এসব কথা জানান।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক ঐক্য দিবসের প্রাক্কালে দেওয়া বক্তব্যে দোভাল আরও বলেন, দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য শক্তিশালী শাসনব্যবস্থা অপরিহার্য। এটি রাষ্ট্রের লক্ষ্যপূরণেও সহায়ক এবং সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য প্রদান করে।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আজকের প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। বর্তমান সময়ে মানুষ অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা করছে। ফলে রাষ্ট্রকে এই প্রত্যাশা পূরণে আরও যত্নবান হতে হবে।’
দোভাল উল্লেখ করেন, ‘একটি জাতির শক্তি তার শাসনব্যবস্থার মধ্যে নিহিত। যখন সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন এই প্রতিষ্ঠান ও তার নেতৃত্বই জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসন মডেল প্রশংসা করে দোভাল বলেছেন, ভারতের নতুন গন্তব্যে পৌঁছেছে— নতুন ধরনের শাসন ব্যবস্থা, সমাজ কাঠামো এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করে। বর্তমান সরকার প্রশাসনিক দুর্নীতি বন্ধে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এনেছে, তা গভীর প্রভাব ফেলছে। ভবিষ্যতে আরও কিছু পদক্ষেপ আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন আসার সময় লক্ষ্য স্পষ্ট হওয়া দরকার। ঝড়ের মধ্যে থাকলেও যেন চোখ না ছেড়ে দিই, ভয় বা বিভ্রান্তির কারণে পথ হারাই না।’
শাসনের উন্নত উপাদান হিসেবে নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন দোভাল। তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন আধুনিক শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ। শুধু ভালো আইন বা কাঠামো থাকলেই হবে না, সেগুলো কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে।’
প্রযুক্তির ব্যবহারকেও গুরুত্ব দেন অজিত দোভাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, যা শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক সেবা বাড়ায়। তবে একইসঙ্গে সাইবার হামলাসহ প্রযুক্তিনির্ভর হুমকির বিরুদ্ধে সমাজকে রক্ষা করতে হবে।’






















