উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে সোমবার ভোরের সময় একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে এবং আহত হয়েছে প্রায় ২৬০ জন। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় রবিবার রাত ১২:৫৯ মিনিটে ঘটে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরতায়, মাজার-ই-শরিফের আশেপাশে— যেখানে লোকসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার।
তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বালখ ও সমানগান প্রদেশের বিভিন্ন এলাকাগুলো। তারা বলছে, জরুরি উদ্ধার ও সহায়তা দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরফত জামান বলেন, উদ্ধারকার্য চলছে এবং মৃত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি আশ্বাস দেন, স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা ইতোমধ্যেই এলাকায় পৌঁছে গেছেন এবং আশপাশের হাসপাতালগুলোকে জরুরি অবস্থায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
USGS তাদের PAGER সিস্টেমে কমলা সতর্কতা (orange alert) জারি করেছে, যা নির্দেশ করে যে, এই ভূমিকম্পে উল্লেখযোগ্য প্রাণহানি এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণত এ ধরনের সতর্কতা আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের জরুরি পদক্ষেপের জন্য প্রয়োজন হয়।
বালখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি যায়েদ জানিয়েছেন, এই ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের ঐতিহাসিক পবিত্র নীল মসজিদ (ব্লু মসজিদ) আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে এক বড় ক্ষতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্স (X)-এ উদ্ধার কাজের বিভিন্ন ভিডিও এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রমের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ তুলে নিচ্ছেন। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, এই ভিডিও ও ছবির সত্যতা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
আফগানিস্তান ভূতাত্ত্বিকভাবে দুটি সক্রিয় ফল্ট লাইনের ওপর অবস্থিত, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্প বা ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। চলতি বছরের আগস্টে দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানে ভূমিকম্প ও এর পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ২,২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং হাজারো মানুষ আহত হন।






















