গাজীপুরে প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখন নির্বাচনে পুরো মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছেন। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোনও ধরনের হুমকি নেই এবং এই নির্বাচন সম্পন্ন হবে অত্যন্ত সুন্দর, স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে। এর জন্য প্রশাসন কঠোর পরিশ্রম করছে।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সভায় অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিভিন্ন আইনবাহিনী। সাংবাদিকদের আলাপকালে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা আলোচনা করেছেন। এছাড়াও গাজীপুরের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়েও সেখানে আলোচনা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গুজব না ছড়ানোর জন্য সাংবাদিকদের সত্য তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে, ফলে গুজবগুলি অনেকখানিই কমে গেছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সমাজের সবচেয়ে বড় দুটির সমস্যা হলো দুর্নীতি ও মাদক। এই দুটিকে সমাজ থেকে দূর করতে সবাইকে সচেতন ও সহযোগিতা করতে হবে। বিশেষ করে মাদক এখন গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা একদিনে নিরসন সম্ভব নয়। সবাইকে একত্রে কাজ করে এর বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি জানান, গাজীপুরের শিল্প এলাকার কারণে এখানে নানা ধরনের নাগরিকেরা আসে, তারা এখানকার বাসিন্দা নয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও কর্মীদের সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া এখানকার ঝুট ব্যবসায়ীর সংখ্যাও বেশি, এবং এদের মধ্যে নিচু স্তরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। চাঁদাবাজির মতো অপরাধের ক্ষেত্রেও নজরদারি বৃদ্ধি করার ওপর আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, গাজীপুরে পুলিশসংকট রয়েছে; সংগঠিতভাবে অধিক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের জন্য সাড়ে ছয়শত পুলিশ সদস্য অতিরিক্তভাবে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের সময়ে পুলিশের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলো যদি জামিনে মুক্ত হন, তবে তারা যদি কোনও অপকর্মে লিপ্ত হয়, তবে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে। আদালত তাদের জামিনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে আইনের আওতায়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গুজবের বিষয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রায়ই বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়। তবে, সাংবাদিকরা সত্য ঘটনা তুলে ধরায় এসব গুজব অনেকাংশে কমে এসেছে। তিনি আরও জানান, দেশের সাংবাদিকদের সততা ও সত্য অনুসন্ধান এই ধরনের গুজব রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সত্য তথ্য প্রকাশ করলে সবাই বুঝতে পারবে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
একই সঙ্গে, নির্বাচনকালীন সময়ে বিভিন্ন দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোরও দায়িত্ব আছে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকলে কোনও সমস্যা হবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব সময় সৎ ও সদূরদর্শী কাজ করছে।
অবশেষে, একটি রাজনীতি দলের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মসূচি নিষিদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সহযোগিতায় অনেক অপকর্ম ও বিভ্রান্তি কমে এসেছে। সেখানে মিথ্যা রটনা প্রচুর, কিন্তু সত্য প্রকাশের মাধ্যমে বেশির ভাগ সমস্যা দূর হয়। তিনি সবাইকে সচেতন থাকতে আহ্বান জানান।




















