কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমানের কোন পরিবর্তন আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের লোভে জনগণের ভোট লুট করে ক্ষমতায় থাকা এই সরকারের সময় শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও তাদের অনুসারীরাই উন্নতির সুযোগ পেয়েছেন, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ আজও দারিদ্র্য ও কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি রোববার দুপুরে নগরীর দৌলতপুর থানাধীন ৬ নং ওয়ার্ডের নারীনির্নীত ভোটারদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
বকুল উল্লেখ করেন, যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশের প্রতিটি পরিবারকে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ও ‘হেলথ কার্ড’ প্রদান করা হবে। প্রথম ধাপে এক কোটি শিক্ষিত যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি এই পরিকল্পনায় সামিল হয়, তাহলে পরিবারভিত্তিক ‘ফ্যামিলি কার্ড’ের মাধ্যমে কম খরচে চাল, ডাল, তেলসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবে। এছাড়াও, নারীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে ‘হেলথ কার্ড’ চালু করা হবে। পাশাপাশি, নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে অনলাইনভিত্তিক কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা ঘরে বসেই আয় করতে পারেন।
সরকারের সমালোচনা করে বকুল বলেন, এই ১৭ বছরে দেশ শাসন করলেও মা-বোনদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি, বরং লুটপাটের জন্য মাথায় উঠে গেছে দুর্নীতি। টিসিবি কার্ড থেকে শুরু করে সরকারি ভাতা—all জায়গাতেই চলছে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট, জনগণের প্রাপ্য বরাদ্দ নিজের পকেটে তুলছে ক্ষমতাধারীরা। তিনি অতীতের ইতিহাস টেনে বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত এই দেশের সুখ-শান্তির কথা ছিল। কিন্তু ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমার ভাগের কম্বলটি গেল কোথায়?’ এবং ‘সবাই সোনার খনি পাচ্ছে, আমি পাচ্ছি চোরের খনি’—এটাই ছিল দুর্নীতির শুরু।
তিনি বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দেশের খারাপ সময়ে ত্রাণের ত্রাতা হিসেবে তুলে ধরেন। বলেন, যখন দেশ নেতৃত্বশূন্য ছিল, তখন জিয়াউর রহমান নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে, তিনি দুর্ভিক্ষে ভুগতে থাকা দেশকে স্বনির্ভর করে তুলেন। বিএনপি সব সময় দেশের মানুষের পাশে রয়েছে বলে ব্যাখ্যা করেন।
জনগণের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বকুল বলেন, আমি ভোটের জন্য আসিনি, আসলে আপনাদের কথা শুনতে ও আমাদের পরিকল্পনাগুলি জানাতে এসেছি। যারা ভবিষ্যতে ভোটের জন্য আসবেন, তাদের প্রশ্ন করুন— এতদিন তারা কোথায় ছিলেন, আর আমাদের জন্য কী করেছেন? নিজেকে তিনি দেশের নেতা তারেক রহমানের বার্তাবাহক হিসেবে তুলে ধরেণ এবং বলেন, ‘আমাকে পাঠিয়েছেন আপনারা কেমন আছেন এবং ভবিষ্যতে কীভাবে ভালো থাকবেন জানাতে। বিএনপি অতীতেও জনগণের পাশে ছিলো, আজও রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৌলতপুর থানা মহিলা দলের আহ্বায়ক সালমা বেগমের সভাপতিত্বে, মদিনা হাওলাদার, জিএম জাকারিয়া, মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক শফিকুল ইসলাম হোসেন, দৌলতপুর থানা বিএনপি’র সভাপতি মুর্শিদ কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ইমাম হোসেন। পরে বকুল মহেশ্বর পাশা মহাশ্মশান পরিদর্শন করেন এবং দৌলতপুর রেলিগেট মোড়ে বিএনপি’র ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের ভোটের জন্য গণসংযোগ করেন।





















