ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের বিজাপুর জেলায় সম্প্রতি আরও একবার ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অন্তত ছয়জন মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষের সূচনা হয়েছিল, যখন ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয় জঙ্গলের মধ্যে অভিযান চালাচ্ছিল। এই ঘটনাটি ঘটে কয়েক সপ্তাহ আগে, যেখানে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে, দশকের পর দশক ধরে চলা সশস্ত্র আন্দোলন বন্ধের পথে রয়েছে। তবে সেই ঘোষণার কিছু দিন পরে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের বড় ধরনের লড়াই শুরু হয়। ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় নিযুক্ত সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, মঙ্গলবার ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় নিয়মিত অভিযানে এনজিও ও সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এই ঘটনায় অন্তত ছয় মাওবাদী নিহত হন এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে আধুনিক অস্ত্রও রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের মধ্যে আঞ্চলিক কমান্ডারসহ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের সদস্যরা রয়েছেন। এদিকে, কয়েক দশক ধরে চলা এই সশস্ত্র সংগ্রাম, যা গত দুই মাস আগে সরকার ও মাওবাদীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার পর স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, আবারও সংঘর্ষের মুখে পড়েছে। গত মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, যারা আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক, তাদের স্বাগত জানানো হবে; তবে যারা অস্ত্রধারণে থাকবেন, তাদের কঠোর প্রতিমুখীন হতে হবে। মাওবাদীরা চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের আদর্শের অনুপ্রেরণায় ১৯৬৭ সালে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। মূলত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার দাবি করে তাদের এই আন্দোলন শুরু হয়, যা দেশের ইতিহাসে একটি বড় বিদ্রোহ হিসেবে বিবেচিত। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই বিদ্রোহে হাজারো জীবন হারিয়েছে—বিদ্রোহী, সেনা ও সাধারণ নাগরিক। ২০০০-এর দশকে মাওবাদীরা দেশের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছিল, তবে গত কয়েক বছরে তাদের শক্তি অনেক কমে গেছে। গত অক্টোবরের মধ্যে, বিজেপি সরকারের তথ্যানুযায়ী, দুই দিনব্যাপী অভিযানে ২৫০ জনেরও বেশি মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন, যার মাধ্যমে তাদের নেতাদের উপর চাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।


















