পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের আদালতের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার মূল সন্দেহভাজন হিসেবে ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, এই হামলার পেছনে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিচ্ছে এমন চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ভারতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তবে পাকিস্তানের এই অভিযোগকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “তারা উন্মাদ হয়ে যাননি, বরং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—ভারত এই ধরনের অপপ্রচার মেনে নেবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “পাকিস্তানে সামরিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, সেনাবাহিনীকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানে এই কারসাজির পেছনে বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য কী, তারা বিভ্রান্ত হবে না।” মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১২:৩৯ মিনিটে ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালতের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, হামলাকারী বিস্ফোরণের ঠিক আগে প্রায় ১২ মিনিট আদালতের বাইরে ছিল। প্রথমে আদালতের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা করতে না পেরে পুলিশ ও আশপাশের গাড়ির লক্ষ্য করে আঘাত করে। তিনি আরও বলেন, «তদন্ত চলছে এবং হামলাকারীকে শনাক্ত করা আমাদের অগ্রাধিকার। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কিছু রেশ থাকতে পারে, যার উপর আমাদের নজর রাখতে হবে এবং খুব দ্রুত এ বিষয়ে স্পষ্টতা আসবে।» এই ঘটনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ অভিযোগ করেন, ভারতের সক্রিয় সমর্থনপুষ্ট চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো এই হামলার সঙ্গে জড়িত। কোনও সন্দেহ না রেখে তিনি বলেন, “ভারত এই অঞ্চলে সন্ত্রাসের মতো জঘন্য অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।” এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ভারতের সন্ত্রাসী প্রক্সির মাধ্যমে পাকিস্তানের নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর হামলা খুবই দুঃখজনক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বিষয়ে সতর্ক থাকুক এবং ভারতের এসব অপকর্ম বন্ধ করতে বলি।’ তিনি আরও জানান, এই তদন্তের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আফগানিস্তানের দিকে আঙুল তোলে মন্তব্য করেন, ‘কাবুলের শাসকেরা পাকিস্তানে সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারে, কিন্তু তারা এই ধরনের যুদ্ধের বার্তা পাঠিয়েছে যা পাকিস্তান পুরোপুরি মোকাবিলা করবে।’ আরেক দিকে, ইসলামাবাদের আদালত চত্বরে এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। গোষ্ঠীটি সতর্ক করে দিয়েছে, ভবিষ্যতেও এই ধরনের হামলা চালানো হবে। এক বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করে, ‘আমাদের যোদ্ধারা আদালত প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়েছে। যারা ইসলামাবাদের বিচারক, আইনজীবী ও কর্মকর্তাদের রায়ের জন্য দায়ী, তাদের লক্ষ্য করে এই হামলা।’ আরও হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তাদের লক্ষ্য যে মুসলিম প্রধান পাকিস্তানে ইসলামী শরিয়া আইন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে।’ সূত্র: এনডিটিভি, ডন






















