আফগানিস্তানে আবারও আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পর এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, সাম্প্রতিক এই হামলার পর পাকিস্তান তার সীমান্তের ভিতরে আফগানিস্তানে লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও হামলা চালানোর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না। তিনি আতঙ্কের ষড়যন্ত্রের জন্য আফগান তালেবান সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেন, এই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতাও রয়েছে সেখানে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর)।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত দুই দিনে পাকিস্তানে দুটি বড় সন্ত্রাসী হামলা সংঘটিত হয়েছে, যার একটির ঘটনা দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ওয়ানা ক্যাডেট কলেজে, অন্যটি রাজধানী ইসলামাবাদে। এই হামলার ঘটনায় পুরো পাকিস্তানে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ তার আলোচনায় জানান, এই হামলার পর সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে অভিযান চালানোর সুযোগও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তিনি আফগান তালেবান সরকারকে আঙুল দিয়ে বলেন, তাদের আশ্রয়ে থাকা সন্ত্রাসাঙ্গঠনগুলোই পাকিস্তানের ওপর অব্যাহত হামলার জন্য দায়ি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘তালেবানের আশ্রয়ে থাকা গোষ্ঠীগুলোই বারবার আমাদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে।’
খাজা আসিফ আরও বলেন, যদি ভারত বা আফগানিস্তান এই ধরনের দুঃসাহস দেখায়, তবে পাকিস্তান তার দাঁত নাড়ানোর জন্য প্রস্তুত। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তান কখনোই আগ্রাসন চালাবে না, তবে যদি তার ওপর হামলা হয়, কঠোর জবাব দেবে।
পাকিস্তানের রাজধানীতে সাম্প্রতিক আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিহত ও পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে উত্তপ্ত হয়েছে। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সে (অর্থাৎ সাবেক টুইটার) এক ঘোষণা দিয়ে খাজা আসিফ বলেছেন, ‘আমরা এক ধরনের যুদ্ধের মধ্যে আছি। যারা ভাবছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধু সীমান্তে লড়ছে, শনিবারের আত্মঘাতী হামলাও তাদের চোখ খুলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী এই সংগ্রাম পুরো দেশের যুদ্ধ, যেখানে সেনাবাহিনীর ত্যাগই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
হামের পর তিনি এক বিবৃতিতে আফগান তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কাবুলের নেতৃত্ব চাইলে পাকিস্তানে সন্ত্রাস রোধ করতে পারে, তবে ইসলামাবাদের বার্তা স্পষ্ট— কাবুল থেকে হামলার যোগসূত্র রয়েছে।’
সাংবাদিকদের সাথে আলাপের সময় তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান আগেই এই হামলার আশঙ্কা করেছিল। ইসলামাবাদের কাছে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, ‘তাদের সব অঞ্চলের হামলার জন্য তালেবানই দায়ি।’ শেষদিকে, তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সীমান্ত বা শহর— কোথাও কোন ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করবে না এবং প্রতিটি হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।






















