জাতীয় ঐক্য আমাদের শক্তি, বিভাজন আমাদের দুর্বলতা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, এ বছর কৃষকরা সম্ভবত আলু নিয়ে বেশ বিপাকের মুখে পড়েছেন। এক একটি রাজনৈতিক দলের আবদার মেটাতে গেলে রাষ্ট্রের সব সম্পদ ব্যয় করে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা গচ্চা যাবে। এই পরিস্থিতিতে, চাষিদের জন্য আলুর ন্যায্যমূল্য পাওয়া খুব জরুরি, গণভোটের চেয়ে এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।
তারেক রহমান বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল যদি মনে করে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্বল এবং ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারে; বা জনগণের ভোটে বিএনপি জয় যেন রুখে দেওয়া যায়; তাহলে তা নিজের জন্য ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনতে পারে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই ধরনের কৌশল অবলম্বন করলে উল্টো ফল হতে পারে।
রাজপথের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টায় লিপ্ত, দয়া করে সেটা বন্ধ করুন। দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের প্রতি তিনি সতর্ক থাকতে আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, বেশ কিছু দল বর্তমানে বিভিন্ন অজুহাতে জাতীয় নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতা নিয়ে সুযোগ নিয়ে তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চাকা ধাক্কা দিতে চাইছে। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত, ভোটের মুখোমুখি হলেও দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করতে সচেষ্ট থাকা। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ভোটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এসেছে।
তারেক রহমান আলু চাষিদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরেন। এ বছর আলুর উৎপাদন ও সংগ্রহে খরচ প্রায় ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজিতে পড়েছে। কিন্তু এখন চাষিরা বাজারে এই আলু বিক্রি করতে পারছেন অর্ধেক দামে বা তেমন লাভ নয়। ফলে, এ বছর কৃষকরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে। রাষ্ট্রের জন্য এই আলুর ভাণ্ডার সংগ্রহ ও বিক্রির জন্য বাজেটে বিশাল টাকা ব্যয় করতে হবে, যা চাষিদের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। পাশাপাশি, তিনি উল্লেখ করেন—বিশ্বের মধ্যে সম্ভবত বাংলাদেশেই সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়। যদিও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলেও, সড়ক নিরাপত্তা বিষয়টি যেন যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।
সভায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মৌলিক সংস্কার শুরু করেছিলেন, তবে তা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তিনি তারেক রহমানকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনার পিতার কাজের দিক থেকে শুরু করে অগ্রগতি আরো এগিয়ে নিয়ে যান; আমরা সব সময় আপনাকে সহযোগিতা করব।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
সভাপতিত্ব করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাত্তার পাটোয়ারী। এর পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এপি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।





















