পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের আদালত ভবনের বাইরে ঘটেছে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ, যেখানে অন্তত ১২ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি দাবি করেছেন, এই হামলায় ভারত সমর্থিত চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে পাকিস্তানের এই অভিযোগকে কড়া প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘পাকিস্তানের নেতাদের ভিত্তিহীন ও উন্মাদনামূলক দাবি আমরা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘বর্তমানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনী সমর্থিত ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা চলছে, যা থেকে তারা নিজেদের দৃষ্টিকে বিড়ম্বনা করতে ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টি স্পষ্টভাবেই বুঝতে পারে এবং পাকিস্তান এই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে; এতে তারা ব্যর্থ হবে না।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানান, ইসলামাবাদের আদালত ভবনের বাইরে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন এবং আহত হয়েছে ৩২ জন। তিনি বলেছেন, হামলাকারী বিস্ফোরণের আগে প্রায় ১২ মিনিট আদালত চত্বরে ছিল এবং প্রথমে আদালতের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে হিংস্র আক্রমণে পুলিশের যানবাহন লক্ষ্য করে হামলা করে। তিনি আরও জানান, তদন্ত চলমান এবং হামলাকারীকে শিগগিরই শনাক্ত করা হবে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এর সঙ্গে জড়িত অন্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোও তদন্তের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার জন্য ভারতের সক্রিয় সমর্থিত চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সম্পৃক্ততা অভিযোগ করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভারতের সন্ত্রাসী প্রক্সি দিয়ে পাকিস্তানের নিরীহ নাগরিকদের ওপর হামলা জঘন্য ও নিন্দার যোগ্য। এই অঞ্চলে ভারতের এ ধরনের অঘোষিত সন্ত্রাসি কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের কড়া বিচার নিশ্চিত করবেন।
তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ আফগানিস্তানের দিকে আঙুল তুলে মন্তব্য করেছেন, ‘কাবুলের শাসকরা পাকিস্তানে সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারবে, কিন্তু ইসলামাবাদের ওপর এই প্রভাব ও চাপ চালানো কেবল কাবুলের বার্তা, যা পাকিস্তান পুরোপুরি মোকাবিলা করতে সক্ষম।’
এদিকে, এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের যোদ্ধারা ইসলামাবাদের বিচার বিভাগে হামলা চালিয়েছে। যারা পাকিস্তানের অ আইনানুগ ও অ-ইসলামী আইনের অধীনে রায় দেন, সেই বিচারক, আইনজীবী ও অফিসাররাই আমাদের লক্ষ্য।’ তারা আরও হুমকি দিয়েছে, ‘পাকিস্তানে ইসলামি শরিয়া আইন প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এই হামলা চালিয়ে যাবে।’ সূত্র: এনডিটিভি, ডন






















