বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়ে উঠবে না, ততক্ষণ রাজপথে আন্দোলন চলমান থাকবে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের তিন উপদেষ্টা নির্বাচন এবং গণভোট প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা পালন করছেন, যার ফলে সব দলই মনে করছে যে, আদর্শ ও বৈষম্যমুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এই কারণেই তারা ঘোষণা দিয়েছেন—লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
মিটিংয়ে তিনি বলেন, সব কিছু প্রকাশ্যে বলা যায় না, প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট তিন উপদেষ্টার নামও প্রকাশ করবেন, কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রমাণ রয়েছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারের এখনই সতর্ক হওয়া উচিত, অন্যথায় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের অনেক দপ্তর এখনও দলীয় পক্ষপাতদুষ্ট। পাশাপাশি, তিন উপদেষ্টা যে প্রভাব বজায় রেখেছেন, তার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
তিনি আরও বলেন, এই অবস্থায় জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছে সন্দেহ—নির্বাচন কতটা ফরএবিডল ও সুষ্ঠু হবে। এর জন্য দায়ী সরকারই। তিনি স্পষ্ট করেছেন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় বলেই তারা মাঠে আছেন। তবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকলে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, তাদের মূল তিনটি দাবির মধ্যে এখনও গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় অপূর্ণ থেকে গেছে: একটি হলো, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়ে তোলা, আর অন্য দুটি হলো, ফ্যাসিবাদের দোষীদের বিচারের ব্যবস্থা আর প্রশাসনে দলীয় পক্ষপাতদুষ্ট চিত্র বন্ধ করা। এই সব বিষয়ে আট দলীয় জোটের স্টিয়ারিং কমিটি পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবে এবং ঘোষণা দেবে।
নেতারা মনে করেন, এই আন্দোলন নির্বাচন বাতিল বা ক্ষুণ্ন করতে না এসে বরং স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুপ্রশ্য ও পরিষ্কার করবে। পাশাপাশি, তারা নির্বাচনের বিষয়েও অভিযোগের মধ্যেই গণভোটের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এমনকি, সংবাদ সম্মেলনে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও মৌলিক সংস্কারের পক্ষে তাঁরা ‘হ্যাঁ’ ভোট চেয়েছেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, কমিশনের মূল সংস্কারগুলোর জন্য আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে। এগুলো ভোটারদের কাছে সহজ ভাষায় তুলে ধরতে হবে। তিনি দাবি করেন, প্রচারপত্র, জাতীয় মিডিয়া ও ওপেন কনিমিউনিকেশনের মাধ্যমে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে স্পষ্ট করে বলতে হবে—এসব সংস্কার কেন জরুরি। অন্যথায়, জনগণের বড় অংশ বিষয়টি বুঝতে পারবে না।





















