আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতারা। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান এবং জনগণের শক্তির ঐক্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। শনিবার বিকেলে খুলনা-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুলের পক্ষে খানজাহান আলী থানা শ্রমিক দলের আয়োজনে একটি বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে থাকাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, গত ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও প্রহসনের পর্যায়ে নামানো হয়েছিল। দেশের মালিকানা জনগণের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে এক পরিবারের হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল। কিন্তু এই দেশের তরুণ ছাত্র-জনতা এই স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সফলভাবে তার পতন ঘটিয়েছে। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারটি আমাদের ১৭ বছরের ত্যাগ ও ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং তাদের একমাত্র শক্তির উৎস হলো বিএনপি সহ সকল গণতান্ত্রিক দলের নৈতিক সমর্থন।
প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বপন বলেন, ড. ইউনূস জাতিকে আশ্বাস দিয়েছেন যে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। এই ঘোষণা জনগণের মধ্যে আশা ও বিশ্বাস বাড়িয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে, তারা শুধু গণতন্ত্রের শত্রু নয়, দেশের শত্রুও।
খুলনা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুলকে একজন যোগ্য নেতা হিসাবে উল্লেখ করে স্বপন বলেন, বকুল শুধুমাত্র আমাদের দলের প্রার্থী নয়, তিনি জাতীয় রাজনীতি ও জনস্বার্থের জন্য কাজ করার সকল যোগ্যতা রাখেন। তাকে পার্লামেন্টে পাঠাতে পারলে ঐক্যবদ্ধভাবে এলাকায় উন্নয়ন হবে এবং জাতীয় পর্যায়েও সম্মান অর্জিত হবে।
ভোটারদের জন্য বিশেষ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচনটি শুধু সরকার গঠনের বিষয় নয়, এর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির আসন বিতরণ হবে। তাই এখন সময় নয় প্রশ্নে জোটবাজি বা আলোচনা চালানোর। তবে আমাদের লক্ষ্য, ধানের শীষের জয়ে শতকরা ৬০ ভাগ ভোট পাওয়া, এবং এই লক্ষ্য পূরণের জন্য বকুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন আপোষহীন নেত্রী, যিনি কখনো রাজপথ থেকে সরে যাননি। তিনি দেশের নেত্রী, জনগণের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের লুটপাটের কারণে খুলনার বন্ধ জুটমিলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, জনগণের অর্থ লুট করে দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে। নির্বাচনে ষড়যন্ত্র হলে তার ভয়ানক পরিণতি হবে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, যারা ভোট ছাড়া নির্বাচন করেছিল, তাদের অবস্থা কি হয়েছে তা জনগণ জানে। এর থেকে শিক্ষাদেয় যে, ভোটাধিকার লুটের জন্য যে সিস্টেম গড়ে তোলা হয়েছে, তার সন্তোষজনক পরিণতি হয়নি।
খানজাহান আলী থানা শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী শহিদুল ইসলাম সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম সঞ্চালনায় এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, খানজাহান আলী থানা বিএনপি সাবেক সভাপতি মীর কায়ছেদ আলী, সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগ হোসেনসহ আরো অনেকে। জেলা ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতারা এ সমাবেশে অংশ নেন।






















