শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশের মধ্যে বর্তমানে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, একটি বিশেষ মহল নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকায় রিপোর্টার্স ইউনিটির এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। একদিকে চলছে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে একটি ইচ্ছাকৃত গোষ্ঠী এই অস্থিরতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অনেক হতাশা ও অন্ধকারের মাঝেও দেখা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে সম্ভবত নির্বাচন হবে। সেই কারণে, বিলম্ব না করে সবাইকে একত্রিত হয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের মতো নয় এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হলে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন জরুরি। তিনি বলেন, এবার যদি একটি বৈধ সরকারের হাতে ক্ষমতা না থাকে, তাহলে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না। এক্ষেত্রে, তিনি দেশের জনগণের Vote ফিরিয়ে আনার জন্য সকল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
অপরদিকে, আগামীকাল সোমবার শোনা হবে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার রায়। বিএনপি নেতারা মনে করেন, এই রায়ের মাধ্যমে একটি মহল দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাচ্ছে। মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই পরিস্থিতি অপব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তিনি সবাইকে এই চক্রান্ত রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ করে, মওলানা ভাসানীর জাতীয় উন্নয়নে অবদান স্মরণ করে বিএনপি নেতা বলেন, তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন এবং একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়ার চিন্তা করেছিলেন। তবে, তিনি তার সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেখার সুযোগ পাননি। তিনি আরও বলেন, মওলানা ভাসানীর প্রতি বিএনপির একগণ্য দায়িত্ব রয়েছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে তিনি দোয়া করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর চাচাতো ভাই মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাজ করতে বলেছিলেন।
এছাড়াও উল্লেখ্য যে, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা হবে। এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিচার চলছিল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায়ের তারিখ নির্ধারিত করেছেন। এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
সর্বোপরি, এই রায়ের প্রতি দেশের মানুষ ও পরিবারগুলো গভীর আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি এই রায়ের সম্প্রচার করবে, এর পাশাপাশি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় এই ঘোষণা প্রচারিত হবে। একই সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজেও সরাসরি দেখানো হবে এই গুরুত্বপূর্ণ রায়।





















