সরকার আজ (১৭ নভেম্বর) শ্রম আইন সংশোধন করে একটি নতুন অধ্যাদেশের গেজেট জারি করেছে, যা ২০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার সুবিধা প্রদান করে। লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এই নতুন আইনটি জারি করে বলেছে, এখন কোনও প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিক একত্রিত হয়ে ট্রেড ইউনিয়নের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই নতুন বিধান অনুযায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক সংখ্যা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিকের সম্মতির ভিত্তিতে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন দেওয়া হবে। যেমন, শ্রমিক সংখ্যা ২০ থেকে ৩০০ হলে অন্তত ২০ জনের সম্মতি; ৩০১ থেকে ৫০০ জন হলে ৪০ জন; ৫১ থেকে ১৫০০ জন হলে ১০০ জন; ১৫০১ থেকে ৩০০০ জন হলে ৩০০ জন; এবং ৩০০১ জনের বেশি হলে ৪০০ জনের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা যাবে। এই পরিবর্তনের ফলে আগের আইনকে হার মানিয়ে এখন সর্বনিম্ন ২০ শ্রমিকের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়নের গঠন সম্ভব হলো। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার আরও সুসংহত হলো এবং শ্রম আইনকে যুগোপযোগী করে তোলা হলো বলে জানানো হয়েছে। আইএলও এর চাহিদা ও আন্তর্জাতিক মানানসইভাবে এ সংশোধনী করা হয়েছে। উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এই সংশোধন শ্রমিক এবং মালিক উভয়ের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ ও আধুনিক আইন প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা শ্রম আইনকে বিশ্বমানের করে তুলবে। পাশাপাশি, নতুন আইনে গৃহকর্মী ও নাবিকসহ অন্যান্য শ্রমিকদেরও শ্রম আইনের আওতায় আনা হয়েছে। শ্রমিকদের ব্ল্যাক লিস্টিং নিষিদ্ধ, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুবিধা বৃদ্ধি এবং যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইসাথে, একই কাজের জন্য নারী ও পুরুষ শ্রমিকের বেতন বৈষম্য নিষিদ্ধ ও শ্রমিকদের বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের পুনর্বাসন এবং চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যা শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকারকে আরো সুগম করবে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, এই সংশোধনীতে শিল্প কারখানায় বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াও উন্নত করা হয়েছে, যা শ্রমিক, মালিক, ও সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।




















