মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার হত্যার রায় নিয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন, এই বিচার সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছভাবে হয়েছে। তিনি বলেন, এই রায়ের ব্যাপারে কারো আপত্তি বা প্রশ্নের কিছু নেই, কারণ এটি অনুসন্ধান ও বিচার প্রক্রিয়া অনেকটাই স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেছে।
সোমবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন, যেখানে রায় বিবেচনার পর তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। গোলাম পরওয়ার মন্তব্য করেন, ট্রাইব্যুনালের রায় অন্তত জনসম্মতিতে কিছুটা আশার বার্তা দিয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ বিচারকালীন সময়ে বিচারকরা যে রায় দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট হয়েছে অপরাধীদের নির্বিচারে নিষ্ঠুরতা, ঘৃণা ও প্রহসনমূলক অপরাধের বিষয়টি। আদালত প্রমাণ হিসেবে অডিও-ভিডিও, ফোনালাপের তথ্য ও অন্যান্য প্রমাণাদি ট্রাইব্যুনাল সামনে আনতে সক্ষম হয়েছে, যা শুনে সবাই বিস্মিত হয়েছেন।
তিনি আরও বললেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের নেতাদের বিচার নিয়ে আগে অনেক প্রশ্ন ওঠে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশেও। তিনি অভিযোগ করেন, সেইসব বিচারগুলো সত্যিকারের স্বচ্ছ বা আন্তর্জাতিক মানের ছিল না। সেগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বাজি ধরা হয় যে, সাজানো, সাক্ষী ও ডকুমেন্টেশন সবই ভুয়া ও কৃত্রিম। এমনকি ব্রিটিশ আদালতেও এই বিচারকে ‘জেনোসাইড অফ জাস্টিস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
সরকারি এই বিচার প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, কোট-আনকোট করে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীদের হস্তান্তর, সাক্ষীদের মামলা থেকে তুলে নেওয়া এবং বিদেশ থেকে লিখিত রায় প্রেরণ—এসব নানা অপ্রমাণিত পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অতএব, আজকের এই রায়ের মাধ্যমে যে বিচার হয়েছে, সেটি একান্তভাবে ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত বলে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা, জোরপূর্বক নিপীড়নের শিকার করেছেন—যেমন, আয়নাঘর, পিলখানা, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায়—তাদের জন্য আরও বেশি বিচারের প্রয়োজন। এখানে একটাই রায় পেয়েছি, যা সবাইকে বিচারপ্রার্থী করে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।





















