খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, মওলানা ভাসানীর জীবন আমাদের জন্য মহান শিক্ষা- সাধারণ জীবন ও উচ্চ ভাবনাকে সম্পৃক্ত করতে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আফ্রো-এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার মানুষের কাছে একজন ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ এবং গণআন্দোলনের মুখপাত্র। বিভিন্ন সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হলেও কখনো ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আকৃষ্ট হননি। তার নেতৃত্বের মূল ভিত্তি ছিল কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ জনগোষ্ঠীর অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য অবিরাম সংগ্রাম। ১৯৪৭ সালে সৃষ্ট পাকিস্তান এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী রাজনীতিতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন, তার পিতা হাজি শারাফত আলী। নিজ শিশু ও কিশোর বয়সেই পিতা-মাতাকে হারান। গতকাল সোমবার সকালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও জাতির পিতা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনা মহানগর বিএনপি’র আয়োজিত আলোচনায় সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। এড. মনা বলেন, তার ডাকনাম ছিল চেগা মিয়া, ছোটবেলায় তিনি ছাচা ইব্রাহিমের আশ্রয়ে থাকতেন। তখন সিরাজগঞ্জে আসেন ইরাকের একজন আলেম ও ধর্মপ্রচারক নাসির উদ্দিন বোগদাদী, যিনি হামিদকে কিছু সময়ের জন্য আশ্রয় দেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি টাঙ্গাইলের কাগমারিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং পরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের কালা গ্রামে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। আপশোসের সঙ্গে বলে রাখতে চাই, অসহায় মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মওলানা ভাসানী প্রতিনিয়ত আমাদের অনুপ্রেরণা। তার অগাধ দেশপ্রেম, দেশের স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্র ও মানবতার বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম আমাদের জন্য চিরস্মরণীয়। তার আদর্শ অনুসরণ করে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। মনা আরও বলেন, অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি এ দেশের মানুষের সাহস জুগিয়েছেন তার নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে। তার হুঁশিয়ারি ও হুঁশিয়ারিতে অত্যাচারী শাসক ও শোষকগোষ্ঠীর মসনদ কাঁপত। কঠিন সময় ও দুর্দিনে জনস্বার্থে মানুষের পাশে থাকার জন্য তিনি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন, মওলানা ভাসানী আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম, যিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অমোঘ নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মেহনতি জনতার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক আলোকবর্তিকা। সভা শেষে বিশেষ দোয়া ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন, নগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু, হাসানুর রশীদ চৌধুরী মিরাজ, থানা সভাপতি কেএম হুমায়ূন কবির, সেখ হাফিজুর রহমান মনি, মুর্শিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান, বদরুল আনাম খান, সাবেক নেতা জামাল উদ্দিন তালুকদার, থানা সাধারণ সম্পাদক শেখ ইমাম হোসেন, আবু সাঈদ হাওলাদার, আসাদুজ্জামান আসাদ, বিএনপি’র বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা।






















