ফিলিপাইনের রেফারির শেষ বাঁশির অপেক্ষায় ছিল পুরো জাতীয় স্টেডিয়াম। যখন রেফারি বাঁশি বাজালেন, তখন দর্শকদের উল্লাসে মুখরিত হলো গ্যালারি। ফুটবলাররা তখন অনুপ্রেরণার ঝাঁকুনি পেয়েছেন। এই জয় বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কারণ, তারা দীর্ঘ ২২ বছর পর ভারতের বিপক্ষে এই জয় অর্জন করতে সক্ষম হল। এর আগে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে মতিউর মুন্নার জোড়া গোলের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের ওপর জয় লাভ করেছিল। এবার,২০১-এরশিয় যুদ্ধের জয় এনে দিয়েছেন শেখ মোরসালিনের বিস্ময়কর গোল। ম্যাচের মাত্র ১২ মিনিটে বাংলাদেশের জন্য প্রথম গোলটি আসে, এবং তারা সেই লিড প্রায় ৮০ মিনিটের জন্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়। এই জয় আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ, বাংলাদেশ হংকং ও নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল হজম করেছিল, যেখানে রক্ষণ বা গোলরক্ষকের ভুলে হারতে বসেছিল। কিন্তু আজ, সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়নি। ভারত দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণ চালিয়েও গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয় হাফের শুরু থেকে ভারতের আক্রমণ তীব্র হলেও বাংলাদেশের রক্ষণ আর গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ৬৫ মিনিটে বাংলাদেশের এক কৌশলী Counter Attack থেকে গোলের সুযোগ তৈরি হয়, তবে সে এগিয়ে যেতে পারেনি। ৭৮ মিনিটে শাকিল আহাদ টপ বলতে বললেন, দূরপাল্লার শট দিলেও ভারতীয় গোলরক্ষক সান্ধু দুর্দান্ত সেভ করেন। ৯২ মিনিটে ভারত সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া ছিল, কিন্তু বাংলাদেশের মানসিকতা আর মিতুল মারমার সাফল্যে তারা সফল হয়নি। পরে, ৯৬ মিনিটে বাংলাদেশের নিরাপদ অবস্থানে থাকার ফলে তারা জয় নিশ্চিত করে। সন্ধ্যার ম্যাচটি শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনাপূর্ণ, বাংলাদেশ জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ যথাসাধ্য আক্রমণ করে ভারতের রক্ষণকে চাপে রাখে। খেলায় একমাত্র গোলটি আসে ১১ মিনিটে, মাঝমাঠ থেকে রাকিব হোসেন তার দ্রুততার মাধ্যমে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তুলে বল পাঠান শেখ মোরসালিনের দিকে। মোরসালিন দ্রুতই গোল করেন, যা পুরো দলের মনোবল বাড়ায়। এরপর, রাকিব আরও একটি সুযোগ তৈরি করেন, তবে ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধু বল প্রতিরোধ করেন। ৩১ মিনিটে পরিস্থিতির অবনতি হয়, যখন ভারতীয় খেলোয়াড়রা গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার সময়, গোলপোস্টের কাছে বল বাইরে চলে যায়। এরপর ৩৫ মিনিটে খেলার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, দুদলের মধ্যে হাতাহাতি ও ঝগড়া শুরু হয়। অর্ধেকের শেষ দিকে, হামজা চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ এক ডিফেন্সিভ ক্লিয়ারেন্স করেন, যাতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রথমার্ধের শেষের দিকে, হামজার এক সেরা শট ভারতীয় রক্ষণের অদম্য প্রতিরোধের কারণে গোলের বাইরে চলে যায়। এই জয় বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের জন্য নতুন আশার কথা, তারা দীর্ঘ ২২ বছর পর এই মনোমুগ্ধকর জয়ে জয়ের স্বাদ পেলেন।






















