আজ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে নামার পর তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সংক্ষিপ্ত এক বৈঠক করেন। এই সময় তিনি গতকালের (২১ নভেম্বর) ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে জানতে চান এবং নিহত পরিবারের জন্য গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এটি নরসিংদীর মাধবদী থেকে উৎপত্তি হয়ে রিখার্টার স্কেলে ছিল ৫.৭ মাত্রার। এই ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও বাবুবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে; পাঁচজনের মৃত্যুর পাশাপাশি বেশ কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৮টার দিকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড্রুকএয়ার এয়ারলাইনের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তাঁকে লালগালিচায় শুভেচ্ছা জানানো হয় ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দুই নেতা একসংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণverlies নিয়ে প্রশ্ন করেন ও শোকপ্রকাশ করেন। এরই সঙ্গে তাঁকে ১৯ বন্দুক স্যালুট ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং স্মারক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এছাড়াও জানা গেছে, দুপুরে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের এই নেতার বৈঠক হবে। বিকেলে শেরিং তোবগে তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি একান্ত বৈঠক ও সন্ধ্যায় সরকারি এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর), পররাষ্ট্র সচিব মো. আসাদ আলম সিয়াম সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী একান্ত বৈঠকের পর দুই দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। এই বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন, সংস্কৃতি ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে আলোচনা হবে।”
তিনি আরো জানান, এই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে, যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, কৃষি ও পর্যটন। ভুটান মূলত বাংলাদেশের পেশাদারদের নিয়োগ, পানি ব্যবস্থাপনা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহযোগিতা চাইবে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়েও আলোচনা সামনে আসতে পারে।
পররাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, বৈঠকের শেষে ভুটানের সাথে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে — যেমন আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, ও কৃষি বিষয়ক। আগামী ২৩ নভেম্বর তিনি বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের সাথে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে।






















