আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীসহ আরও আটটি দল আসন সমঝোতার ভিত্তিতে অংশ নিতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। অনেকের মতে, বিভিন্ন দলের আলাদ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচনকে আরও অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে চাইছে এই জোট। এতে করে ভোটারদের কাছে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপি সমর্থিত দলগুলোর জন্য নির্দিষ্ট আসন রাখার গুঞ্জন থাকায়, অবশেষে জামায়াতে ইসলামীও একই পথ নিতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচনী পদ্ধতি (প্রPOR), আগামী নভেম্বরের জন্য গণভোটের পরিকল্পনা এবং জুলাইয়ে সংশ্লিষ্ট আইনগত বিষয়সমূহের নানা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী ও তার সমমনাদলসমূহ সম্প্রতি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এর ফলে, এই সম্ভাবনাও বেড়ে গেছে যে, আসন সমঝোতা বিষয়টি এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হতে পারে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় রয়েছে। তাদের প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন, এবং প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত হচ্ছেন। যেখানে অন্য প্রার্থী বা বিদ্রোহী প্রার্থীর কোনও নজরে আসেনি। এর ফলে, তারা নির্বাচন পর্যায়ে বেশ শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
আট দলের শরিক দলের জন্য জামায়াত কিছু আসন ছেড়ে দিতে পারে বলে জানা গেছে, তবে এখনো কংকাল কোনও সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। জামায়াতের আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, তারা সংসদে আট দলের নেতাদের দেখতে চায় এবং প্রয়োজনে ১০০টি আসন পর্যন্ত ছাড় দিতে প্রস্তুত। তবে বর্তমানে এই আট দল একমত যে, প্রতিটি আসনে যেই মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবে, সেইকেই নির্বাচনে পাঠানো হবে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, এই আট দল এখন নিজেদের জয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ইসলামের বিজয়কেই তারা লক্ষ্য করছে। তিনি জানান, এখনো কেউই আসন ভাগাভাগির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাদের মূল লক্ষ্য হলো, প্রতিটি আসনে এভাবে প্রার্থী দিয়ে বিজয় অর্জন। এছাড়া, বিভিন্ন পেশার মানুষদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রমতে, বর্তমানে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসার আশঙ্কা রয়েছে। এর পাশাপাশি, অন্তত চারজন সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, কয়েকজন সাবেক ছাত্র সংসদের ভিপি ও জিএস এবং অন্যান্য জনপরিচিত নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যারা চলতি সময়ে সম্মুখসারির রাজনীতির নেতৃস্থানীয় ছিলেন।
আরও জানা যায়, সম্প্রতি জামায়াত দেশের বেশ কিছু সুপরিচিত ধর্মীয় বক্তা ও স্কলারদের মনোনয়ন দেয়ার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে অন্যতম হলেন, ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারি, যাকে ঢাকা-৫ (যাত্রাবাড়ী-ডেমরা) আসনে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা চলছে, যদিও জামায়াতের একজন সূত্র এই তথ্য সরাসরি অস্বীকার করেনি। বরং তারা জানিয়েছে, দেশের খ্যাতনামা আলেমদের সংসদে আনতে তারা বদ্ধপরিকর।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ার একটি আসনে জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা আমির হামজা মনোনয়ন পেয়েছেন। পাশাপাশি, এমন কিছু আলেম রয়েছেন যারা সরাসরি জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত না হলেও, তাদের মনোনয়ন দিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাইছে দলটি।





















