রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দের আন্দোলনে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামী ১ ডিসেম্বর। মামলার যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম এ তারিখ নির্ধারণ করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আইনজীবীরা জানান, মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে দেখা হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ রেহানাকে। এছাড়া মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তার মেয়েও অন্তর্ভুক্ত, মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার সব যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন হয়।
সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ করেছেন শেখ হাসিনা। এতে মূল আসামিদের জেল মৃত্যুদণ্ডের শঙ্কাও দেখা যাচ্ছে বলে দুদকের আইনজীবীরা মন্তব্য করেছেন।
পূর্বাচলে শেখ হাসিনা পরিবারের জন্য প্লট চাওয়ার সময়, শেখ রেহানা নিজের জন্যও প্লটের আবেদন করেছিলেন। পরে, ক্ষমতার দৌরাত্ম্য কাজে লাগিয়ে রাজউককে প্লট বরাদ্দের আদেশ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসিনার অস্বচ্ছভাবে হলফনামা দিয়ে ১০ কাঠা সরকারি জমির মালিক হন রেহানা। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করে।
আদালতে ৩২ জন স্বাক্ষীর জবানবন্দির পাশাপাশি, অবৈধ নির্দেশনামা ও ভুয়া হলফনামাসহ বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করেন দুদকের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১ ডিসেম্বর দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
সাক্ষীদের বক্তব্যে উঠে আসে, শেখ হাসিনার নামে প্লট বরাদ্দের জন্য সেদের ওপর চাপ দেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। এতে, যদিও তিনি নিজে প্লট পাননি, আদালত এই মামলার মূল আসামি হিসেবে তার নামও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দুদকের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রায়ে হাসিনা-রেহানা ছাড়াও টিউলিপেরও যাবজ্জীবনের শাস্তি হতে পারে।
অভিযুক্ত একমাত্র গ্রেফতার আসামি হিসেবে রায়ে রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা খুরশিদ আলমের আইনজীবীরা বলেন, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে উচ্চতর কর্তব্য পালন করছিলেন।
অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিরা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াখি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তের সঙ্গে যুক্ত দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদও এই মামলার আসামি।






















