হংকংয়ের তাই পো এলাকায় একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এ ঘটনার সূত্রপাতের পর বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বার) ভোরে এখনও ধোঁয়া উঁচুতে দেখা গেছে। দেশটির ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, চারটি ভবনের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে পুরোপুরি নিভাতে তাদের আরও সারা দিন সময় লাগবে বলে ধারণা। ওয়াং ফুক কমপ্লেক্সের আটটি ভবনের মধ্যে চারটি আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, অন্য তিনটি ভবন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আশপাশের ১৩টি স্কুল স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সর্বশেষ আপডেটে নিশ্চিত করা হয়েছে, এই দাহ্য অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন ৫১ জন, আর বাকি চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৫ জন, যেখানে আটজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন। আরো নিখোঁজ রয়েছেন ২৭৯ জন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হংকং শহরের প্রধান নির্বাহী জন লি।
অগ্নিকাণ্ডের প্রথম খবর পেয়ে বুধবার বেলা ২:৫১ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুন লাগার পর শত শত বাসিন্দা দ্রুতই আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত হন। যাঁরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জন্য জরুরি পুনর্বাসন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায়ও ভবনগুলো থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। এখনো কোথাও কোথাও ছোট ছোট শিখা দেখা যাচ্ছে, ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, আগুন লাগার পর থেকেই অনেক বাসিন্দা ঘটনাস্থলে ভিড় করেছেন। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে তারা দ্রুত ভবন থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন। অনেকে রাতে বন্ধু বা পরিবারের বাড়িতে থাকার কারণে ভোরে এসে নিজের প্রিয় গৃহের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে থাকেন।
প্রাথমিকভাবে কি কারণে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে, ঘটনা তদন্তে পুলিশ একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের দুই পরিচালক ও একজন প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, আগুন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় অসচেতনতা বা নিরাপত্তা মানের অভাব দেখা দিয়েছে। ভবনের ভিতর পলিস্টাইরিনসহ অন্যান্য দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন আরও দ্রুত বিস্তার করে। এছাড়াও, ভবনের নিরাপত্তা জাল, ক্যানভাস ও প্লাস্টিকের কভারগুলো মান অনুযায়ী না থাকার কারণেও এই বিপর্যয় ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।






















