হংকংয়ের উত্তর হংকংয়ের টাই পো জেলায় অবস্থিত ওয়াং ফুক কোর্ট নামের এক বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই অগ্নিকাণ্ডে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও খোঁজ মিলছে না ২৭৯ জনের, যারা সম্ভবত ভবনের ভিতরে আটকা পড়ে রয়েছেন। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন অনেক বাসিন্দা। আহত ও দগ্ধ ২৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যার মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর। খবর আল-জাজিরা সংবাদ সংস্থার।
বুধবার রাতে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যখন ওই ভবনের ৩১ তলা বিভিন্ন আবাসিক ভবনে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আবাসিক ভবনগুলো থেকে প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া ও শিখা আকাশে উড়তে দেখা যায়। আগুনের ভয়াবহতায় দমকল বিভাগ ‘লেভেল-ফাইভ অ্যালার্ম’ ঘোষণা করে, যা সর্বোচ্চ সতর্কতা নির্দেশ করে।
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি বৃহস্পতিবার সকালে এই অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করেন। এর আগে, ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছিলো ন’জনের মৃত্যুর কথা।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক ডেরেক আর্মস্ট্রং চ্যান জানান, রাতের অন্ধকার ও প্রচণ্ড তাপমাত্রার কারণে আগুনে প্লাবিত ভবন দুটিতে প্রবেশে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ধসে পড়া স্ক্যাফোল্ডিং ও ছিটকে পড়া ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারকাজে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, অনেক বাসিন্দা নিজেদের ফ্ল্যাটে আটকা পড়ে থাকতে পারেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তবে তাদের কাছে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে জানানো হয়নি।
১৯৯৬ সালে, কাঁউলুনের গার্লি বিল্ডিংয়ে আগুনে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা হংকংয়ে এর আগে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড। এই দুর্ঘটনাও নেচে আসে বাঁশের স্ক্যাফোল্ডিং থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে। ধ্বংসাবশেষ পড়ার শব্দে আশপাশের মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। অগ্নিনির্বাপণ কাজের জন্য ১২৮টি ফায়ার ট্রাক ও ৫৭টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কাছাকাছি দুটি কমিউনিটি সেন্টারে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
টাই পো জেলায়, যেখানে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। রেকর্ড অনুযায়ী, এই কমপ্লেক্সে প্রায় দুই হাজার ফ্ল্যাটে থাকতেন মোট ৪৮০০ ব্যক্তি। অগ্নিকা-ের কারণে এই এলাকাটি এখন শোকাবহ ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।






















