রংপুরের তারাগঞ্জে এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীর নির্মম হত্যা ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাতে কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর এলাকায় তাদের নিজের বাড়িতেই এই জঘন্য ঘটনা সংঘটিত হয়। নিহতরা হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) এবং তার স্ত্রী সুর্বণা রায় (৬০)।
পরের দিন রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া না পেয়ে বাড়ির পাশে মোড়লিপাড়া থেকে মই ব্যবহার করে ভেতরে প্রবেশ করেন। দরজা খুলে দেখা যায়, ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে, আর রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের মৃতদেহ। পরিস্থিতি দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
অভিজ্ঞ প্রতিবেশী দীপক চন্দ্র রায় বলেন, তার পরিবার দীর্ঘদিন থেকে ওই বাড়ির দেখাশোনা করে আসছে। তিনি সকালে সেখানে যান এবং ঘর থেকে কেউ না বের হওয়ায় তার সন্দেহ হয়। এরপর তারা আশপাশের লোকজনের সহায়তায় ঘরে প্রবেশ করেন এবং দেখেন, দাদা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকছেন, আর রান্নাঘরে দিদির দেহ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নিহত যোগেশ চন্দ্র রায় একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর নিয়েছেন। তার দুই ছেলে— বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে এবং ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে কর্মরত। স্বামী-স্ত্রীর এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের সকলের মাঝে শোকের স্তবক পড়েছে। পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোনাব্বর হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে, অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
তারা আরও জানান, প্রথম ধারণা অনুযায়ী, দুজনেরই মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটির রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।





















