দেশের ব্যাংকখাতে কোটিপতি গ্রাহকদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের মার্চের শেষে যেখানে মোট কোটিপতি আমানতকারী ছিল ১২১,৩৬২ জন, সেখানে এই সংখ্যা জুনে বেড়ে দাঁড়ায় ১২৬,৫০৬ জন। এরপর সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ৭৩৪ জন নতুন কোটিপতি হিসাব খুলেছেন। এ সময়ে ব্যাংকে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টিতে পৌঁছায়, যা মার্চের তুলনায় ৫৫ লাখের বেশি। এছাড়া, আমানত সক্রিয়ভাবে বেড়েছে, যেখানে জুনে মোট জমার পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, September শেষে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ লাখ ৩১ হাজার ১১৯ কোটি টাকায় পৌঁছায়। ফলে, এই তিন মাসে ব্যাংকে মোট ৩৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা বাড়ে।
অন্যদিকে, কোটিপতি হিসাবের সংখ্যাও ক্রমশ বেড়েছে। জুনে এই ধরনের অ্যাকাউন্ট ছিল ১২৭,৩৩৬টি, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেড়ে ১২৮,৭০৫টিতে পৌঁছায়। অর্থাৎ, তিন মাসে নতুন কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ৭৩৪টি বৃদ্ধি পায়। আগের বছর মার্চে এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ১২১,৩৬২টি। অল্প সময়ের মধ্যে এই ধরণের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকিং খাতের এই প্রবণতা পর্যবেক্ষকদের মনোযোগে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কোটিপতি হিসাব মানে ব্যক্তিগত অর্থনীতির অংশ হলেও, এতে অনেক বেসরকারি, সরকারি ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত। এক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক হিসাব রাখতে পারে। এছাড়াও, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টগুলোও এই তালিকায় ধরা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে মাত্র ৫ জন কোটিপতি আমানতকারী ছিল। পরে সময়ের সাথে সাথে এই সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৫ সালে ৪৭ জন, ১৯৮০ সালে ৯৮টি, ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি, ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩টি এবং ২০১০ সালের মধ্যে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩ হাজারের বেশি হয়।
বর্তমানে, সা¤প্রতিক বছরগুলোতেও কোটিপতি আমানতকারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। ২০২০ সালে এই ধরনের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯৩,৮৯০টি, ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬টি, ২০২২ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি, ২০২৩ সালে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮৫টি এবং ২০২৪ সালে তা আরো বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি। এই বৃদ্ধির ধারায় ব্যাংকিং খাতের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখাটি যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়ে চলেছে।


















